ডেড সিঃ যে সাগরে চাইলেও কেউ ডুবতে পারবেনা!

  • রেজবুল ইসলাম
  • মে ১, ২০১৮

‘ডেড সি’ নাম শুনলেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে! মনে হয়, মৃত লোকদের এক সাগর, যেখানে ভাসছে লাশ! আসলে বিষয়টি কিন্তু মোটেও ভয়ংকর নয়; বরং ‘ডেড সি’ ভীষণ সুন্দর, ভ্রমণে যাওয়ার জন্য চমৎকার এক জায়গা। এই ‘ডেড সি’র পানি এতটাই ঘন যে ওই পানিতে কেউ চাইলে শুয়েও থাকতে পারে। শুধু তা-ই নয়, চাই কি শুয়ে শুয়ে বইও পড়া যায় এখানে। কিংবা ল্যাপটপ নিয়ে গিয়ে ওখানে শুয়ে শুয়ে নেট ব্রাউজও করা যাবে। তবে এর নাম কেন ‘ডেড সি’ হলো?

নাম ‘ডেড সি’ হলেও এটা কিন্তু মোটেও কোনো ‘সি’ বা সাগর নয়। ‘মৃত সাগর’ নাম হলেও এটা আসলে একটা হ্রদ। তবে মিঠাপানির নয়, এর পানি ভীষণ লবণাক্ত। সাগরের লবণাক্ত পানি এখানকার তুলনায় কিছুই নয়। এখানকার পানির লবণাক্ততা সাগরের পানির তুলনায় সাড়ে আট গুণ বেশি! এত নোনতা পানিতে না বাঁচতে পারে কোনো মাছ, না বাঁচতে পারে সাগরের নিচের অন্য কোনো গাছ।

এই বিশাল হ্রদে তাই কোনো মাছই নেই। নেই পানির নিচের কোনো গাছপালাও। আর সে কারণেই এই হ্রদকে বলা হয় ‘ডেড সি’ বা ‘মৃত সাগর’।

বিজ্ঞানীদের বিশ্লেষনে দেখা গেছে, অন্যান্য মহাসাগরের তুলনায় ডেড সি’র পানিতে মিশে থাকা খনিজ উপাদানের অনেক পার্থক্য রয়েছে। মৃত সাগরে পানিতে মিশে থাকা লবনে ১৪% ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, ৪% পটাশিয়াম ক্লোরাইড, ৫০% ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড এবং ৩০% সোডিয়াম ক্লোরাইড আছে। ডেড সি’র লবনাক্ততা প্রায় ৩০%। ফলে পানির ঘনত্ব ১.২৪ কেজি/লিটার। কিছু বিজ্ঞানের কথা বলি, কোন বস্তুকে পানির উপরে রাখলে তা ডুবে যাবে। অবশ্য সব জিনিস যে ডুবে যাবে তাও না। যেই বস্তুটিকে পানির উপরে রাখা হবে তার ঘনত্ব যদি পানির ঘনত্বের থেকে বেশী হয় তাহলে সেই বস্তুটি পানিতে ডুবে যাবে। আর যদি কম হয়, তাহলে ভেসে থাকবে। ডেড’সির পানির ঘনত্ব উচ্চ প্লবতার কারনে অনেক বেশী, ফলে যে কেও এই মৃত সাগরে ভেসে থাকতে পারে। তাছাড়া, অনেক মানুষই বিশ্বাস করে যে, ডেড সি এর কাদা নাকি অনেক রোগ নিরাময় করতে পারে।

আর/এস

Leave a Comment