পায়ে পানি আসা (Peripheral edema)
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
দেহের নিম্নাংশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পানি জমে টিস্যু স্ফীত হয়ে গেলে তাকে পেরিফেরাল এ্যাডেমা (Peripheral edema) বলা হয়। এ অবস্থায় পা ও পায়ের গোড়ালি ফুলে যায়। বয়স্কদের ব্যক্তিদের এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অন্যান্য সমস্যা যেমনঃ কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিয়র (congestive heart failure), যেকোনো ধরনের আঘাত, অ্যালকোহোলিজম (alcoholism), অল্টিচুড সিকনেস (altitude sickness), গর্ভধারণ, উচ্চ রক্তচাপ, সিক্ল সেল অ্যানিমিয়া (sickle cell anemia) অথবা দীর্ঘক্ষণ একই ভাবে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার ফলে পায়ে পানি আসতে পারে ও পা ফুলে যেতে পারে। এছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ যেমনঃ এম্লোডিপাইন (amlodipine), প্রিগ্যাবালিন (pregabalin) ব্যবহার করলে এ সমস্যা দেখা দেয়।
হূদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে গেলে (Congestive Cardiac Failure) উচ্চ রক্ত চাপ, হার্টের রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত, হূদযন্ত্রের ভাল্বের সমস্যা হলে, হার্টের মাংসপেশীর কার্যকারিতা কমে আসে ফলে পায়ে, পেটে, বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্ত চাপ, বুক ধড়ফড় করা, অতিরিক্ত ক্লান্তবোধ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
লিভারের সমস্যা- লিভার সিরোসিস হলে প্রথমে পেটে ও পরে পায়ে ও বুকে পানি জমে যায়। হেপাটাইটিস ভাইরাস বি ও সি, অতিরিক্ত মধ্যপান, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে লিভারের সিরোসিস হয়। এসব রোগীর খাবারে অরুচি, হলুদ প্রশ্রাব, রক্ত বমি ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
কিডনীর সমস্যা- নেফ্রোটিক সিনড্রোম, নেফ্রাইটিস ও কিডনী বিকল হলে প্রথমে মুখে, পরে পায়ে ও বুকে পানি আসে। এসব রোগীর বেশী বেশী প্রস্রাব, বমি বমি লাগা, খাবারে অরুচি, প্রস্রাব ফেনা ফেনা, প্রস্রাবের রং ঘন সরিষার তেলের মত, কম প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকে।
রক্তে আমিষের মাত্রা কমে গেলে, পরিমিত খাবার না খেলে, হজম না হলে, খাদ্য নালী থেকে আমিষ বের হয়ে গেলে অথবা কিডনী দিয়ে আমিষ বেরিয়ে গেলে, আমিষ শরীরে তৈরী না হলে রক্তে আমিষের মাত্রা কমে যায়। রক্তে আমিষ কমে গেলে পায়ে, পেটে ও বুকে পানি আসে।
থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা- থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা শরীরে কমে গেলে পায়ে পানি আসে। এই রোগে রোগীর গলগন্ড, শীত শীত লাগা, মোটা হয়ে যাওয়া, মাসিকের রক্ত বেশী যাওয়া, কোষ্টকাঠ্যিন্য হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো থাকে।
ওষুধের কারণে পা ফুলে যাওয়া- ব্যথার ওষুধ যেমন:ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপরোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, ইটোরিকক্সিব খেলে পায়ে পানি আসে। এছাড়া উচ্চ রক্ত চাপের ওষুধ ক্যালাসিয়াম চ্যানেল ব্লকার (Calcium Channel Blocker) যেমন নিফেডিপিন, অ্যামলোডিপিন এসব ওষুধ খেলে পায়ে পানি আসতে পারে।
পায়ে পানি আসলে করণীয় :
পায়ে পানি আসলে রোগীকে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পর্যবেক্ষণ ও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা যেমন CBC, Urine R/E, বুকের X-ray, ইসিজি, হরমোন, পেটের আলট্রাসনোগ্রাম, হার্টের ইকো-কার্ডিওগ্রাম ইত্যাদি করে পানি আসার কারণ নির্ণয় করা যায়। তবে রোগীর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আর/এস