
ঘুরে আসুন সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির থেকে
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রায় পাঁচশ বছরের পুরানো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির। জেলার উল্লপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নে এই মন্দিরের অবস্থান। তিনতলা বিশিষ্ট এই মন্দিরের চারপাশের দেয়ালে পোড়ামাটির অলঙ্করণে ভরপুর, বাইরে থেকে দেখতে অনেকটাই কান্তজির মন্দিরের মতো। স্থানীয়ভাবে দোলমঞ্চ নামে পরিচিত এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নবরত্ন মন্দির। পূজার ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন অনিন্দ্য সুন্দর এই প্রত্নস্থল থেকে। দিনাজপুর জেলার কান্তজীর মন্দিরের অনুকরনে গঠিত তিনতলা এই মন্দিরের আয়তন ৬৫.২৪ বাই ৬৫.২৪। বর্গাকার মন্দিরটি প্রায় ২ ফুট প্লাটফরমের উপর তৈরী। মন্দিরের মূল কক্ষটি বেশ বড়। চারদিকের দেওয়ালের বাইরের চারপাশে পোড়ামাটির ফলক দিয়ে সাজানো ছিল। পরে কালের বিবর্তনে প্রাকৃতিক আর মানুষের অবহেলায় সংস্কারের অভাবে সব নষ্ট হলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মন্দিরটি অধিগ্রহন এবং নতুন করে এর সংস্কার করে।
স্থানীয়ভাবে এই মন্দির ভাদুরী জমিদারের বাড়ি আর সেই জমিদারীর মন্দির নামেই পরিচিত। অনেকে মনে করেন এই মন্দির খাজনা আদায়ের জন্য তৈরী করা হয়েছিল। এখানকার স্থানীয় লোকজনের পূর্বপুরুষের স্মৃতি হাতড়ে কেউ কখনো পূজা আর্চনা হতে দেখে নাই। নবরত্ন মন্দিরের বাইরে পূজার আয়োজন হলেও ভেতরে পূজা হতে দেখেনি কেউ। এমনিভাবেই নবরত্ন মন্দিরকে দেখে এসেছে এলাকার মানুষজন। প্রথমদিকে সরকারের পক্ষ থেকে নবরত্ন মন্দিরে পূজার জন্য আয়োজনের কথা বলা হলেও দুটো কারণে স্থানীয় হিন্দু পরিবাররা রাজি হয়নি। এক, এটি জমিদারী সম্পত্তি হওয়ায়। প্রজা হিসেবে জমিদারী সম্পত্তি ব্যবহার যথাযোগ্য মনে করেনি তারা। দুই এখানকার হিন্দু পরিবারদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। নবরত্ন মন্দিরে পূজা চালিয়ে যাওয়ার মতো সাধ্য এখানকার পরিবারগুলোর নেই। এবারণে এ মন্দিরের ভেতরে পূজা না দিয়ে বাইরেই পূজা করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে এলাকার লোকজন। এই এলাকায় এখনো দুই তিন মাইল জুড়ে স্থানীয় মাপে তিন চার পুরুষ অর্থ্যাত ২০/২৫ ফুট মাটি খুড়লে পুরনো লম্বা প্রাচীর এবং সারি সারি ইটের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়। ধারণা করা যায় জমিদারী আমলের এই জমিদার বাড়ি মাটির নীচে হারিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজনও এটা বিশ্বাস করে। তাদের ধারণা মন্দির গুলো জমিদার বাড়ির চেয়ে উঁচুতে ছিল অথবা দৈববলে মন্দিরগুলো মাটির নীচে হারিয়ে যায়নি।
যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে দিনে দিনে বেড়িয়ে আসতে পারেন হাটিকুমরুল মন্দির থেকে। বগুড়াগামী যে কোনও বাসে উঠে নেমে পড়তে পারবেন হাটিকুমরুল। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে টিআর ট্রাভেলস ও এসআর ট্রাভেলসের এসি বাস যায় ভাড়া ৫শ' থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকা। এছাড়া একই জায়গা থেকে টিআর ট্রাভেলস, এসআর ট্রাভেলস, শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শাহ সুলতান পরিবহন, বিআরটিসির বাস চলে বগুড়ার পথে। ভাড়া ৩শ' থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। হাটিকুমরুলে রাত যাপনের কোন ব্যবস্থা নেই। সারাদিন ঘুরেফিরে রাতে এসে থাকা যাবে সিরাজগঞ্জ শহরে।
তথ্য এবং ছবি : গুগল