কুশন কভারে রঙের মেলা

  • ওমেন্স কর্নার
  • মার্চ ১০, ২০২৪

একটা সময় ছিল যখন সোফায় আরাম করে বসার জন্য কুশনের প্রচলন শুরু হয়। এরপর শুরু হয় এর আকারের বিবর্তন। তারপর ধীরেধীরে পরিবর্তন আসে এর পরিবেশনের জায়গায়, অবশেষে চলছে এর রঙের সমাহার বা কালার কম্বিনেশন নিয়ে গবেষণা। কোন রুমে কেমন রঙের কুশন হবে, ফ্লোর, সোফা না বিছানা কোন জায়গায় কোন রঙের কুশন বেশি ভালো লাগবে, পর্দার সঙ্গে কুশনের রঙের মিল কেমন হবে- এসব বিষয় সম্বন্ধে বিস্তারিত জানিয়েছেন শান্ত মারিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলোজির ইন্টেরিয়র আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক মোহাম্মদ আবিদ আবান অভিক।

রঙ বাছাই:

সাধারণত লিভিং রুমে সোফার রঙের সাথে মিলিয়ে কুশন কভারের রঙ হয়। তবে আজকাল সোফায় ব্যবহৃত পাচঁটি কুশন পাঁচ রঙের হয়। এতে সোফাটি বেশ হাইলাইট হয়। অনেক সময় সোফায় ছয়টি কুশনও ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে তিনটি কুশন বড় সাইজের আর বাকি তিনটি কুশন ছোট সাইজের হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে বড় তিনটির রঙ এক রকম আর বাকি ছোট তিনটির রঙ অন্য তিন রকমের হলে দেখতে বেশ বর্ণিল লাগবে। সোফা যদি এক রঙের রেক্সিনের হয় তাহলে বিভিন্ন রঙের কুশন দেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বেনারসি,  সিল্ক,  সুতি,  ধুপিয়ান বা টিস্যু কাপড়ের কুশন ব্যবহার করুন। এতে ঘরে আভিজাত্য আসবে।

আরো পড়ুন: মশা তাড়াতে ঘরোয়া উপায়

আর রঙের ক্ষেত্রে বেছে নিন লাল-গোল্ডেন মিক্সড, ডিপ গ্রিন, অথবা নীল রং। এসব রং একরঙা সোফাকে বেশ ফোকাস করে। আর কাঠের সোফাতেও ইদানীং গোল্ডেন বা অফহোয়াইট রঙের গদি ব্যবহার করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আপনি পাঁচটি কুশনে পাঁচ ধরনের রঙ ব্যবহার করতে পারেন। আজকাল সোফায় গদিতে ফোমের পরিবর্তে বড় বড় কুশন রাখা হয় এ ক্ষেত্রে সোফার নিচের গদির সাথে মিলিয়ে কুশনের রঙ কিছু দিন পরপর বদলে নিতে পারেন। গরমের সময় হলে একটু গাঢ় রঙ, আর গরমের তীব্রতা কম হলে অপেক্ষাকৃত হালকা রঙের কুশন কভার ব্যবহার করা যেতে পারে। লিভিং রুমের পর্দার কাপড়ে যে ধরনের প্রিন্ট থাকে সেই প্রিন্টের সঙ্গে মিল রেখে কুশন বানাতে পারেন।

ডিভানের ক্ষেত্রেও একই রকম। তবে ডিভানে তিনটি কুশন দেওয়াই ভালো। ডিভান সাধারণত গোল্ডেন বা অফহোয়াইট কিংবা চকলেক রঙের হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে লাল, কালো বা ডিপ গোল্ডেন রঙের কুশন ব্যবহার করতে পারেন। লিভিং রুমে কার্পেটের ওপর বড় কুশন ছড়িয়ে রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ব্লক বা বাটিকের কুশন হলে দেখতে ভালো লাগবে। আর একটু ভারি কাপড় হলে ভালো হয়। কারণ ফ্লোরের কুশনগুলো বসার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাই সুতি ভারী কাপড় ব্যবহার করাই ভালো। বিভিন্ন হাতের ও স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করা কুশনও দেখতে ভালো লাগবে। 

বিছানার ক্ষেত্রে সব সময় ছোট সাইজের কুশন বেছে নিন। গোল, লম্বা, চারকোনা অথবা তিনকোনা কুশন বিছানার ওপর বিছিয়ে রাখলে বেশ ভালো দেখাবে। বিছানার জন্য কুশন কভারের কাপড়টা অপেক্ষাকৃত পাতলা হলে ভালো হয়। এ ক্ষেত্রেও বিছানার চাদরের রঙকে প্রধান্য দিন। তবে খুব বেশি মিল না থাকলেও চলবে। চেষ্টা করুন একটু হালকা রঙ বেছে নিতে। কারণ বেডরুমের পর্দা বা বিছানার চাদরের ক্ষেত্রে আমরা হালকা রঙ পছন্দ করি। তাই হালকা রঙের কুশনই এখানে মানানসই। এতে রুমটি স্নিগ্ধ আর সজীব লাগবে।

শিশুদের রুমে কার্টুন আঁকা কুশন দিতে পারেন। আর শিশুদের রুমের পর্দা বা বিছানার চাদর সাধারণত একটু গাঢ় রঙের হয় যাতে দাগ-ময়লা হলে বোঝা না যায়। তাই এ ক্ষেত্রে কুশনের রঙও গাঢ় নির্বাচন করুন।

আরো পড়ুন: ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখতে সহজ করবে যেসব উপায়

এ ছাড়া ঘড়ের যেসব কর্নারে ছোট ছোট সোফা বা মোড়া থাকে সেগুলোর ওপর গোল কুশন দিলে দেখতেও ভালো লাগবে আবার বসতেও আরাম লাগবে।

আকৃতির তারতম্য:

সাধারত সোফার কুশনের বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড সাইজ ১৪ বাই ১৪ ইঞ্চি। একটা যেকোনো আকৃতি যেমন চারকোনা বা গোল হতে পারে। অনেকে ১৮ বাই ১৮ ইঞ্চি কুশনও ব্যবহার করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে বড় ডিজাইনের সোফা হলে ভালো হয়। আবার অনেক সোফায় গদির পরিবর্তে কুশন রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে ৩২ বাই ৩২ ইঞ্চি কুশন দেখতে ভালো লাগে। এসব বড় কুশনের ক্ষেত্রে এর ওপর ছোট কুশন রাখতে পারেন। যার সাইজ ২২ বাই ২২ ইঞ্চি হতে পারে। 

কোথায় পাবেন:

বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস যেমন আড়ং, যাত্রা, নিপুণ, বিবিয়ানা, পিরাণ, কে-ক্রাফট, জয়িতায় পাওয়া যাবে নানা ধরনের কুশন। এসব জায়গায় সুতি এবং খাদি কাপড়ের কুশন পাওয়া পাবেন। এ ছাড়া নিউ মার্কেটে বাহারি ডিজাইন আর রঙের কুশন কিনতে পারবেন। সেখানে চাইলে আপনি নিজের মাপ মতো কুশন বানিয়েও নিতে পারে। ডিজাইন আর আকৃতির কারণে কুশনের দাম কম-বেশি হয়। তবে প্রতি পিস কুশন ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন।

আরো পড়ুন: মেঝের চিটচিটে ভাব দূর করার টিপস

টিপস:

  • কুশনের রঙ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দেয়ালের রঙ, পর্দা এবং বিছানার চাদরকে প্রধান্য দিন।
  • তিন-চার সাইজের কুশন একসাথে না দেওয়াই ভালো।
  • একটু ভালো কাপড়ের কুশন কিনুন। যাতে বারবার বদলাতে না হয়।
  • ব্লক বা স্ক্রিন প্রিন্টের কুশনগুলো বারবার না ধোয়াই ভালো।
  • চেইন স্টাইলের কুশনের থেকে বোতাম স্টাইলের কুশন ব্যবহারের জন্য ভালো।
  • মেঝের কুশনগুলো একটু ভারী এবং গাঢ় রঙের হলে ভালো হয়।
  • ভারী তুলা ব্যবহার করুন মেঝের কুশনের জন্য।
  • সিনথেটিক বা নরম তুলা সোফা এবং বিছানার জন্য ভালো।  

পোস্ট ক্রেডিট: এনটিভিবিডি 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment