আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
রক্তশূন্যতা আসলে রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। নানা কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে। রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরির অন্যতম প্রধান কাঁচামাল হলো আয়রন। কোনো কারণে শরীরে আয়রনের উপস্থিতি কমে গেলে রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া হতে পারে। একে বলে আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা। ডাক্তারি ভাষায় ‘আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া’। এ ছাড়া ভিটামিন বি ও ফলিক এসিডের অভাব, দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ কিছু রোগ (যেমন কিডনি বিকল), বিশেষ কিছু ইনফেকশন (যেমন যক্ষা), রক্তের ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, রক্ত উৎপাদনকারীর মজ্জার সমস্যা, রক্তের লোহিত কণিকা নিজে নিজে ভেঙে যাওয়া, রক্তক্ষরণ ইত্যাদি কারণে রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।
কারণ
দেহে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য আয়রনের অভাব থাকলে লৌহের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা দেখা যায়। হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্ত কণিকার একটি উপাদান, যার উপস্থিতির জন্য রক্তের বর্ণ গাঢ় লাল হয়। এটি লোহিত রক্ত কণিকাকে দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। পরিমিত আয়রনের অভাব হলে দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন করতে পারে না এবং আয়রনের অভাবে ধীরে ধীরে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়।
যে সব মহিলার ঋতুস্রাবের সময় রক্তক্ষরণ বেশি হয়, তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ লোহিত রক্ত কণিকায় আয়রন থাকে, যা মাসিকের রক্তক্ষরণের সাথে সাথে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। এছাড়াও যারা বিভিন্ন রোগ যেমন পেপটিক আলসার (Peptic ulcer), হায়াটাল হার্ণিয়া (Hiatal hernia), কোলন পলিপ (Colon polyp) বা কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে (Colorectal cancer) আক্রান্ত তাদেরও এ ধরনের রক্তস্বল্পতা হতে পারে।
দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ কম থাকলে এই রোগ হতে পারে।
ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরে খাবারের আয়রন রক্তপ্রবাহ দ্বারা শোষিত হয়। ক্ষুদ্রান্ত্রের সমস্যা যেমন সিলিয়াক ডিজিজের কারণে ক্ষুদ্রান্ত্রের পরিপাককৃত খাবার থেকে পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে রক্তস্বল্পতা হয়।
গর্ভবতী মহিলাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি দেখা যায় কারণ এ অবস্থায় তাদের নিজেদের ও ভ্রূণের উভয়ের আয়রনের চাহিদা মেটাতে হয়।
লক্ষণ
চোখ, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বল লাগা, অবসাদগ্রস্ত হওয়া, মাথা ঘোরা, বমির ভাব, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, মুখে ঘা, খাবার গিলতে অসুবিধা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এনিমিয়া বেশি হলে শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ লাগা ব্যথা এমনকি হার্টফেইলিউর পর্যন্ত হতে পারে।
আর/এস