পেডোফেলিয়া- এক মানসিক বিকৃতি!
- তামান্না ইসলাম
- জুলাই ৭, ২০২০
শিশু ধর্ষণ, ধর্ষণ চেষ্টা বা শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় "পেডোফেলিয়া" বলা হয়ে থাকে।
পেডোফেলিয়া হলো এমন এক বিকৃতি যাতে একজন পূর্ন বয়স্ক ব্যাক্তি কিংবা একজন বয়স্ক (বৃদ্ধ) ব্যাক্তি ছোটো শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করে বা যৌন চাহিদা পূরনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে পৃথিবীতে ‘সবচে হিংস্র এবং জঘন্য ধরনের অপরাধ' হলো পেডোফেলিয়া।
পেডোফেলিয়া'র অধিক শিকার হয় সাধারণত-
• অবুঝ শিশু, যাদের যৌন চাহিদা নেই বা ধারনা নেই।
• সুবিধা বঞ্চিত শিশু।
• কর্মজীবী পরিবারের সন্তান
• মেন্টালি চ্যালেঞ্জড বা মানসিক কোনো রোগে আক্রান্ত শিশু।
• কলহপূর্ন পরিবারের শিশু।
• নজরদারি ছাড়া পরিবারের শিশু।
এছাড়াও যেকোনো পরিবেশে, যেকোনো অবস্থানের মধ্যে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে।
পেডোফেলিয়া'র শিকার শুধু মেয়ে শিশু হবে এমনটা ভাবা উচিত নয়। একজন পেডোফেলিয়া ব্যাক্তি ছেলে-মেয়ে উভয় শিশুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করে। এবং সুযোগ পেলে তার নোংরা চাহিদা পূরণ করে।
এমনকি এক্ষেত্রে তারা ধরা পরার ঝুঁকি এড়াতে শিশুটিকে হত্যা পর্যন্ত করে।
বেসরকারি সংস্থা 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন' এর তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৯৯জন শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে।
এই তালিকাতে মেয়ে শিশুর পাশাপাশি ছেলে শিশুর সংখ্যা নেহাৎ কম না!
অনেক অভিভাবক তো সামাজিক সম্মানহানির ভয়ে অভিযোগ পর্যন্ত জানান না। ফলে অপরাধী মুক্ত ঘুরে বেড়ায়।
আমাদের দেশের সামাজিক অবস্থানের কারনে শিশুদের যৌন শিক্ষা সঠিকভাবে দেয়া হয় না। শরীরের প্রাইভেট পার্টস, গুড টাচ-ব্যাড টাচ, সেইফ সার্কেল এর মতো বেসিক ধারনা নেই অনেক অভিভাবকদের! বাচ্চাদের শেখাবে কি করে তারা!
স্কুল-কলেজ গুলোতেও এ বিষয়ে নেই সঠিক শিক্ষা। ফলে সচেতনতার বদলে আতংক আর সাবধানতার বদলে ট্যাবু বাড়ছে।
সর্ব স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি, সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলিং, ভিক্টিম ব্লেইমিং বন্ধ করা, অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিতকরণ, স্কুল-কলেজগুলোতে এই বিষয়ে শিক্ষা দেয়া এখন তাই সময়ের দাবী।