রাধা কে ? রাধা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ১৬, ২০২১

সংস্কৃত শব্দ রাধার অন্যতম অর্থ হল "শক্তিধাত্রী", “সৌভাগ্যদায়িনী", সফল”। দেবী রাধা হলেন শ্রী কৃষ্ণের সর্বপ্রিয়া আরাধিকা। "রাধাতন্ত্র" অনুসারে দেবী রাধা "ত্রিপুরাসুন্দরী মাতা" রূপে তন্ত্রে পূজিতা হন। দেবী রাধিকা হলেন শ্রীকৃষ্ণের আদিশক্তি, কৃষ্ণার্ধতনু, কৃষ্ণবক্ষস্থলস্থিতা, কৃষ্ণহৃদয়েশ্বরী, তিনিই কৃষ্ণের পরমেশ্বরী, তিনিই আদিমহালক্ষী। "শক্তি উপনিষদ" মতে দেবী রাধিকা হলেন "কুলকুণ্ডলিনী শক্তি"। রাধাষ্টমী তিথিতে দেবী রাধারানীর জন্ম-উৎসব পালন করা হয়।

রাধিকা বা রাধারাণী হলেন হিন্দু ভারতীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায় দের আরাধ্য দেবী, মহালক্ষী। বৈষ্ণব ভক্তেরা তাঁকে বলেন শ্রীমতী। হিন্দুধর্মের বহু গ্রন্থে বিশেষত শাক্ত সম্প্রদায়, রা উত্তর ভারতীয় বৈষ্ণব তত্ত্ববিদ্যা অনুসারে, রাধা হলেন পরম সত্ত্বা শ্রীকৃষ্ণের শাশ্বত সঙ্গী বা তাঁর দিব্যলীলার শক্তি ('নাদশক্তি')। রাধা ও কৃষ্ণের যুগলমূর্তিকে 'রাধাকৃষ্ণ রূপে আরাধনা করা হয়। যদিও ভগবানের এই রূপের অনেক প্রাচীর উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু দ্বাদশ শতাব্দীতে যখন জয়দেব গোস্বামী সুবিখ্যাত কাব্য গীতগোবিন্দ রচনা করেন, তখন থেকেই দিব্য কৃষ্ণ ও তাঁর পরমাপ্রকৃতি রাধার মধ্যেকার দিব্য ও নিত্য প্রেম সম্বন্ধিত বিষয়টি সমগ্র ভারতবর্ষে আরও বেশি মূর্ত হয়ে উঠে। 

আরো পড়ুন :  ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি দেবে কাঁচা টমেটো!

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী, তিনি হলেন গোকুলনিবাসী বৃষভানু ও কলাবতীর কন্যা। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ও দেবীভাগবতের মতে, রাধার সৃষ্টি ভগবান কৃষ্ণের শরীরের বামভাগ থেকে হয় এবং সেই রাধাই দ্বাপর যুগে বৃষভানুর পুত্রী রুপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। রাধা শ্রীকৃষ্ণের সহস্রাধিক গোপিকা দের মধ্যে শ্রীমতী রাধা গোপী শিরোমণি। শ্রীকৃষ্ণের মথুরা গমনের পর শ্রীরাধা বৃন্দাবনের আয়ান ঘোষ-এর সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল। আবার ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ অনুসারে শ্রী কৃষ্ণ এবং রাধার বিবাহ হয়েছিল, তাই বলা যায় যে শ্রী কৃষ্ণই ছিল রাধার আসল স্বামী। রাধা এই পুরাণে শ্রীকৃষ্ণকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল।

দেবী রাধিকার অন্যান্য নাম হল রাধা, বার্ষভানবী, সর্বেশ্বরী, মহালক্ষী, বৈকুন্ঠেশ্বরী, মানিনী, মালিনী, বৃন্দাবনেশ্বরী, মথুরেশ্বরী, কৃষ্ণময়ী, মাধবী, কেশবি, রাহী, শ্যামা, কৃষ্ণা, রাই, কিশোরী, শ্রী, কৃষ্ণাত্মিকা, ব্রজেশ্বরী, বিনোদিনী, বনলক্ষী, গোবিন্দমোহিনী আরও অনেক।

আরো পড়ুন :  আপনার প্রিয় সন্তানের উচ্চতা বাড়ানোর সহজ ৬টি কৌশল!

শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার প্রেম বিষয়ক বহু গাঁথা কবিতা বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যা বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য ঐশ্বর্য। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা সুবিস্তৃতভাবে বর্ণিত হয়েছে। বাংলার ভক্তি আন্দোলনেও এর সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়েছিল। তবে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কৃষ্ণচরিত্র বইয়ে রাধার অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি নিজে রাধা কৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন। তাঁর বাড়িতে রাধাকৃষ্ণের নিত্য পূজা হতো।

সূত্র : উইকিপিডিয়া 
 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment