খাগড়াছড়ির নয়নাভিরামের ইতিহাস
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- মার্চ ৮, ২০১৮
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত অত্র এলাকাটি কখনো ত্রিপুরা, কখনো বা আরকান রাজন্যবর্গ দ্বারা শাসিত হয়েছে। তন্মধ্যে ৫৯০ হতে ৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মোট ৩৬৩ বছর ধরে ত্রিপুরা রাজাগণ বংশপরম্পরায় পার্বত্য চট্টগ্রাম (খাগড়াছড়িসহ) ও চট্টগ্রাম শাসন করে। অতঃপর ৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১২৪০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আরকান রাজাগণ ২৯৭ বছরব্যাপী এ এলাকা শাসন করলেও তদ্পরবর্তীতে ১০২ বছরব্যাপী (১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত) পুনরায় ত্রিপুরা রাজাগণ এ এলাকার কর্তৃত্ব করেন।
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় সবুজ পাহাড় আর বুনো জঙ্গলের মাঝে অবস্থিত নয়নাভিরাম ঝর্না দুটির নাম তৈদুছড়া ঝর্না। ত্রিপুরা ভাষায় “তৈদু” মানে হল “পানির দরজা” আর ছড়া মানে ঝর্না। অসাধারণ সৌন্দর্য আর প্রাকৃতিক বৈচিত্রতা এই ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। খাগড়াছড়িতে যে কয়টি দর্শনীয় স্থান রয়েছে তৈদুছড়া তাদের মধ্যে অন্যতম। এখানে পাহাড় আর সবুজ বুনো জঙ্গেলর মাঝে আঁকা বাঁকা পাহাড়ের ভাঁজ দিয়ে বয়ে চলে ঝর্নার জল। ৩০০ ফুট উচু পাহাড় হতে গড়িয়ে পড়া পানি এসে পরছে পাথুরে ভূমিতে। অন্য সকল ঝর্নার মত এর পানি সরাসরি উপর হতে নিচে পরছে না। পাহাড়ের গায়ে সিড়ির মত তৈরি হওয়া পাথুরে ধাপ গুলো অতিক্রম করে নিচে পরছে।
ব্রিটিশ সরকার ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে বাংলার নবাব মীর কাশিমের হাত থেকে চট্টগ্রাম এবং ১৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ত্রিপুরা মহারাজার কবল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের (অংশ বিশেষের) উপর চূড়ান্তভাবে কর্তৃত্ব লাভ করে। অতঃপর ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জুনের নোটিফিকেশন নং-৩৩০২ অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামকে চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীকালে ইংরেজ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাসন ও রাজস্ব সংগ্রহের সুবিধার্থে ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে ১লা সেপ্টেম্বর মং, চাকমা ও বোমাং নামে তিন সার্কেলে বিভক্ত করে। অধিকন্তু, ব্রিটিশ সরকার ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে ‘‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ফ্রন্টিয়ার পুলিশ অ্যাক্ট’’ প্রবর্তন করে স্থানীয় আদিবাসীদের সমন্বয়ে স্বতন্ত্র একটি পুলিশ বাহিনীও গড়ে তোলে।
তথ্য এবং ছবি : গুগল