মায়ের কফিনে পাথর চোখে মাহী

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ২৪, ২০১৮

নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বাবা ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান। সেই দু:সহ স্মৃতি এখনও দগদগে। এবার চলে গেলেন মমতাময়ী মা। মাঝখানে মাত্র কয়েক দিনের ফারাক। এমন কঠিন বাস্তবতায় কি করতে পারে চৌদ্দ বছরের একটি কিশোর? মায়ের কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে কীইবা বলার আছে তার! তাইতো নির্বাক, হতভম্ব আর শোকে পাথর তানজিদ সুলতান মাহী। শুক্রবার সন্ধ্যায় মা আফসানা খানমের কফিন যখন শেষ বারের মতো খোলা হচ্ছিল তখন মায়ের মুখের দিকে পাথর চোখে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ছেলে মাহীকে। উপস্থিত স্বজনদের সঙ্গে মাহীর এই নির্বাক তাকিয়ে থাকা যেন সহস্র কথাই বলে।

গত ১২ মার্চ নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান নিহত হন। স্বামীর শোক সইতে না পেরে স্ত্রী আফসানা খানমও ব্রেন স্ট্রোক করেন ১৮ মার্চ। পরপর দুইবার স্ট্রোক করেন তিনি। মস্তিস্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। নেওয়া হয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে। ২৩ মার্চ সকালের দিকে আফসানা খানমও চলে যান না ফেরার দেশে। একমাত্র ছেলে মাহি বাবা নিহত হওয়ার সময় কাছে না থাকলেও মায়ের স্ট্রোকের সময় পাশেই ছিলেন। বাবা নিহত হওয়ার খবর শুনে মা আফসানা খানম কোনো কান্না করেনি। চোখের পানি না ফেলেই শক্ত ছিলেন। হয়তো ছেলে ভেঙ্গে পড়বে এমনটা মনে করে শক্ত ছিলেন। ওই সময় মাহির মা শুধু বলেছিলেন, যা হারাবার হারিয়েছি, তা কোনো দিন পূরণ হওয়ার মতো নয়।

মায়ের মৃত্যুতেও মাহি উচ্চ স্বরে কান্না করেনি। বরং মায়ের মতো শক্তই ছিলেন। শুধু নির্বাক তাকিয়ে মায়ের মরদেহ দেখছিলেন আর কি যেন ভাবছিলেন। হয়তো ভাবছিলেন, সামান্য কটা দিনের ব্যবধানে বাবা মা দুজনই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। একা রয়ে গেলাম আমি। এভাবেই সারাবাংলার কাছে বলছিলেন মাহির স্বজন রেজাউল করিম। শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টায় রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে গাউসুল আজম জামে মসজিদে আফসানার জানাযা সম্পন্ন হয়। এরপর তার মরদেহ বনানী সামরিক কবরস্থানে নিয়ে স্বামীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
গত ১২ মার্চ নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় স্বামীর নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর আফসানা খানম বলেছিলেন, যা ক্ষতি হয়েছে তা কোনোদিনও পূরণ হওয়ার নয়। এরপর তিনি ১৮ মার্চ ব্রেন স্ট্রক করেন। তখন থেকেই আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

সূত্র : সারাবাংলা 

 

Leave a Comment