বিয়ের জন্য যেভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন, ২৫ হাজার ২০ লাখ

  • ওমেন্স কর্নার
  • জুন ২৯, ২০২৫

টাকার অভাবে বিয়ে নিয়ে চিন্তায় আছেন? চিন্তার কারণ নেই, কারণ দেশে এখন এমন কয়েকটি ব্যাংক আছে, যারা ‘বিবাহ ঋণ’ নামের বিশেষ ঋণ সুবিধা দিচ্ছে। ব্যক্তিগত ঋণ বা পারসোনাল লোন নিয়েও বিয়ের খরচ চালানো যায়।

বিয়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। বিভিন্ন ব্যাংকের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণ মিলবে। এই ঋণ মাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এই ঋণ পরিশোধে সময় পাবেন সর্বোচ্চ ৫ বছর। তবে কিস্তির সংখ্যা বাড়ালে সুদের পরিমাণও বেড়ে যায়।

কারা নিতে পারবেন
একজন চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে বিয়ের ঋণ ও ব্যক্তিগত ঋণের পরিমাণ নির্ভর করে মূলত আবেদনকারীর মাসিক আয়, চাকরির ধরন, চাকরির অভিজ্ঞতা, বয়স ও লেনদেনের ইতিহাসের ওপর। যাঁদের স্থায়ী চাকরি এবং আয় বেশি, তাঁরা তুলনামূলকভাবে ঋণ পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। সাধারণত মাসিক কিস্তি যেন গ্রাহকের আয়ের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ থাকে, তা ব্যাংক বিবেচনা করে। তাই কার কত ঋণ মিলবে, তা নির্ধারিত হয় ওই ব্যক্তির আর্থিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে। অন্য পেশাজীবীরাও একইভাবে ঋণ পাবেন।

যেসব ব্যাংক ঋণ দেয়
দেশে বেশ কিছু ব্যাংক আছে যারা বিশেষ বিবাহ ঋণ দেয়। এর মধ্যে আছে উত্তরা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, ইউসিবি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইত্যাদি। এ ছাড়া বেশির ভাগ ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত ঋণ সুবিধায় বিবাহ ঋণ নেওয়া যায়।

কার কী অফার
বিয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক নানা ধরনের ঋণের অফার দেয়। সেখান থেকে কিছু ব্যাংকের বিবাহ ঋণের অফার দেখানো হলো।

বিয়ের জন্য সর্বোচ্চ ঋণ পাওয়া যায় এনসিসি ব্যাংক থেকে। ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় বিবাহ ঋণ দেয় এনসিসি ব্যাংক। এই ঋণের সীমা ১ লাখ টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। চাকরিজীবী, জমির মালিক, ব্যবসায়ীরা এই ঋণ পাবেন। ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে মাসে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা আয় হতে হবে। বাকিদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা।

বেসরকারি ব্যাংক উত্তরা ব্যাংক থেকে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বিয়ের জন্য ঋণ পাওয়া যায়। এক থেকে তিন বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে বিয়ের জন্য ২ লাখ টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। তবে এই ঋণ ব্যক্তিগত ঋণ সুবিধার আওতায় নিতে হবে। ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সী চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীরা এই ঋণ পাবেন।

একইভাবে ইউসিবি বিয়ের জন্য ঋণ দেয়। এই ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। ৫ বছরের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয়। চাকরিজীবী, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, জমির মালিকসহ নানা পেশার লোকজন এই ঋণ পেতে পারেন।

বিজিবি সদস্যদের জন্য বিয়ে ঋণ রয়েছে সীমান্ত ব্যাংকে। শুধু বিজিবির কর্মরত সদস্যরাই ঋণ সুবিধা নিতে পারবেন। ঋণটি মূলত সংশ্লিষ্ট সদস্যের নিজের বিয়ের জন্য প্রযোজ্য হলেও সন্তানের বিয়ের ক্ষেত্রেও এই ঋণ নেওয়া যাবে। সাধারণ সদস্যদের জন্য এই ঋণের সীমা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা আছে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। এই ঋণ পেতে হলে আবেদনকারীকে বিজিবির স্থায়ী সদস্য হতে হবে এবং ন্যূনতম ৬ বছর সক্রিয় চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তবে সন্তানের বিয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৬ বছর পর্যন্ত এই ঋণ নেওয়া যাবে।

ঋণ নিতে কী কী লাগবে

বিয়ের জন্য ঋণ পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, চাকরির প্রমাণপত্র (যেমন আইডি কার্ড, নিয়োগপত্র), সর্বশেষ ৩ থেকে ৬ মাসের পে-স্লিপ, ব্যাংক হিসাবের বিবরণী, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ এবং কিছু ক্ষেত্রে অনাপত্তি সনদ (এনওসি) প্রয়োজন হয়।

এ ছাড়া যেহেতু এই ঋণ নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়, তাই প্রয়োজনে কিছু ক্ষেত্রে বিয়ের কার্ড, চিকিৎসার কাগজ বা ভ্রমণ পরিকল্পনার কপি দিতে হতে পারে। এর সঙ্গে বর বা কনের সাম্প্রতিক তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি চাইতে পারে ব্যাংক।

Leave a Comment