কাউন্সেলিং করানো মানেই পাগল হয়ে যাওয়া নয়!

  • অনুক্তা ঘোষাল
  • মার্চ ১৭, ২০২১

কাউন্সেলিং করানো মানেই পাগল হয়ে যাওয়া নয়।  এই সত্যটা প্রতিষ্ঠা করতে আমাকে লড়়াই করতে হয়েছে অনেক। সমাজের এক চিরাচরিত দৃষ্টিভঙ্গি হল মানসিক চিকিৎসা যারা করাচ্ছে তাদের একঘরে বা কোনঠাসা করা এবং তাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা। আমি নিজে জীবনে এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি । দীর্ঘ দেড় বছর গুরুতর নার্ভের সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম। মূহুর্তের মধ্যে জীবন গিয়েছিল থমকে ।

সেই সময়  মানসিক জোর বজায় রাখতে আমার কাউন্সেলিং চলছিল। এই সত্যটা জানার পরমুহূর্তেই আমাকে একঘরে করা হয়। পাড়ার লোকেরা আমাকে পাগল বলে ডাকতে শুরু করে। আমার বাবা মা কেউ কটূক্তি শুনতে হয় অনেক। আমি কিন্তু হার মানি নি। প্রতিবাদ করেছি দৃঢ়ভাবে। আর সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ করেছি আমার কাজের মধ্যে দিয়ে। একদিন পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

আরো পড়ুন : ঘুম নিয়ে সমস্যা? দ্রুত ঘুম আসার উপায় জেনে নিন!

নিজের জোরে গ্র্যাজুয়েশন,পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ও এম বি এ কমপ্লিট করে বিশ্বের সেরা একটি অডিট ফার্মে (বিগ ফোর) চাকরির সুযোগ পাই।পাশাপাশি করি টেলিভিশন অ্যাংকারিং ও মডেলিং। যুক্ত হই সমাজ সেবা মূলক কাজের সাথে। এরপর পরের পর আটটি নামকরা বিউটি কনটেস্টে জয়ী হই। অন্য আরও চারটি নামকরা বিউটি কনটেস্টে টপ ফাইনালিস্ট হই। বিভিন্ন নামকরা সংবাদপত্র থেকে শুরু করে বড় বড় ম্যাগাজিনে নামসহ ছবি বেরতে শুরু করে। বড় ব্র্যান্ডের ক্যালেন্ডারও ছাপে আমার ছবি দিয়ে।

সমাজ সেবামূলক কাজের জন্যও সম্মানিত হই।২০১৯ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে রেডিও প্রেসেন্টরের ভূমিকায় নিযুক্ত হই। এখন এমন একটা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি যেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কাউন্সেলিং করানো হবে সমাজের সেই মানুষগুলোকে যারা কোনো না কোনো কারণে জীবনে আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। 

তাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শেখানো হবে সেখানে।তবে লড়াই শেষ হয়না। আজও সমাজের নানা দৃষ্টিভঙ্গীর বিরূদ্ধে একাই লড়াই করে চলেছি। আজও মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে মানুষের শারীরিক অসুস্থতা হলে যদি ডাক্তারের কাছে যেতে সমস্যা না হয় তাহলে মানসিক চিকিৎসা করাতে কুন্ঠিত হওয়ার কোন কারণ নেই। শরীর থাকলে শরীরের রোগ হয়।

আরো পড়ুন : জেনে নিন কি কি উপসর্গ থাকলে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত নয়!

শরীরের রোগ হলে আমরা বলি শরীর খারাপ। তেমনি মনের রোগকে বলা উচিত মন খারাপ।কাউন্সেলিং করানো মানেই পাগল হয়ে যাওয়া নয়।  এই সত্যটা প্রতিষ্ঠা করতে আমাকে লড়়াই করতে হয়েছে অনেক। সমাজের এক চিরাচরিত দৃষ্টিভঙ্গি হল মানসিক চিকিৎসা যারা করাচ্ছে তাদের একঘরে বা কোনঠাসা করা এবং তাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা।

এখন এমন একটা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি যেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কাউন্সেলিং করানো হবে সমাজের সেই মানুষগুলোকে যারা কোনো না কোনো কারণে জীবনে আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। তাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শেখানো হবে সেখানে। তবে লড়াই শেষ হয়না। আজও সমাজের নানা দৃষ্টিভঙ্গীর বিরূদ্ধে একাই লড়াই করে চলেছি। আজও মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে মানুষের শারীরিক অসুস্থতা হলে যদি ডাক্তারের কাছে যেতে সমস্যা না হয় তাহলে মানসিক চিকিৎসা করাতে কুন্ঠিত হওয়ার কোন কারণ নেই। শরীর থাকলে শরীরের রোগ হয়। শরীরের রোগ হলে আমরা বলি শরীর খারাপ। তেমনি মনের রোগকে বলা উচিত মন খারাপ।

আরো পড়ুন : স্তন্যদায়ী মায়েদের যে খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে!

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment