গর্ভকালীন সময়ে খুব কমন কিছু সমস্যার সহজ সমাধান

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮

'প্রেগনেন্সি' বিষয়টা কমবেশি সবার কাছে মিরাকিউলাস লাগে। একটা দেহে দুটো প্রাণ! একসাথে নির্ভর করছে দুটো সত্ত্বার ভালো থাকা-মন্দ থাকা, সুস্থতা-অসুস্থতা--মায়ের সুস্থতার উপর নির্ভর করে সন্তানের বাঁচা-মরা। প্রেগনেন্সিতে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে হরমোনের বেশ তারতম্য ঘটে, শারীরিক গঠনের কিছু পরিবর্তন হয়। তাই মায়ের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা নতুন করে দেখা দেয় বা বেড়ে যায়। দেখা যায় যে, ডেলিভারি হয়ে যাবার পরপর সে সমস্যাগুলোও চলে যায়। এগুলোর বেশিরভাগই ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক। প্রেগনেন্সি ইস্যুটা যেহেতু সবার কাছে খুব সেন্সিটিভ তাই অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এসব সমস্যায়। আসলে খুব বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হবার কিছু নেই। জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে এলে, কিছু পরামর্শ মেনে চললে যার অধিকাংশই প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা যায়। একেবারেই কমন কিছু সমস্যার সমাধান নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি।

বমিবমি ভাব এবং বমি : দেখা যায় যে প্রতি ১০০ জন গর্ভবতীর প্রায় ৭৫ জনেরই এ সমস্যাটা দেখা দেয়। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই এ সমস্যা হয়। -সকালে ঘুম থেকে উঠেই, বলা হয়ে থাকে বিছানাতেই শুকনো খাবার যেমন : টোস্ট, বিস্কিট, মুড়ি ইত্যাদি খেতে। -প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে বলা হয়। -অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হয়। -একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।

কোমর ব্যথা : প্রতি ১০০ জনের প্রায় ৫০ জনেরই এ সমস্যা দেখা দেয়। -অনেক বেশি ওজন বাড়িয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, মোট দশ ঘণ্টা। -পা কিছুটা উঁচুতে রেখে যেমন : পায়ের নিচে একটা বা দুটো বালিশ রেখে বিশ্রাম নিন। -শক্ত বিছানায় শোয়া ভালো। -উঁচু হিলযুক্ত জুতো পরা যাবে না। - কুঁজো হয়ে বসা বা কোনো জিনিস নিচ থেকে তোলা পরিহার করা শ্রেয়। - দাঁড়ানোর সময় সোজা হয়ে দাঁড়াবেন। - ভারী এবং পরিশ্রমের কাজ করবেন না। - কোমরে ম্যাসাজ করতে পারেন। - গরম বা ঠাণ্ডা কিছু দিয়ে স্যাঁক দিতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য :

- প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।

- আঁশজাতীয় খাবার যেমন : শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।

- ইসপগুলের ভূষি খাওয়া যেতে পারে। - চাপ এলে টয়লেটে যেতে বিলম্ব করা যাবে না।

- কিছুটা হাঁটাচলার অভ্যেস করা ভালো, দিনে ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৩ দিন হাঁটা যেতে পারে।

পায়ে খিল ধরা :

- পায়ে ম্যাসাজ করতে হবে।

- গরম স্যাঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়।

- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সেবন করা যেতে পারে।

পায়ে পানি আসা/ পা ফোলা :

- বিশ্রাম নিন এবং পা দুটো একটা বা দুটো বালিশের ওপর রাখুন। 

- একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না।

- আরামদায়ক জুতো পরুন।

- বেশি করে পানি পান করুন।

 বুক জ্বালাপোড়া, এসিডিটি :

- একসাথে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে।

- খাবার পরপরই বিছানায় শুতে চলে যাওয়া যাবে না।

- বিছানায় যাবার অনেকক্ষণ আগেই খাবার খেয়ে ফেলুন।

- উঁচু বালিশে শুলে আরাম পাওয়া যায়।

- এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

 পায়ে আঁকাবাঁকা শিরা, পাইলস :

- পায়ে আঁকাবাঁকা শিরার জন্যে ক্রেপ ব্যাণ্ডেজ ব্যবহার এবং বিশ্রামের সময় পা উঁচু করে রাখতে বলা হয়।

- পাইলসের জন্যে নিয়মিত টয়লেট সারা জরুরি; কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। টয়লেট সারার সময় বেশি চাপ দেওয়া যাবে না। বাম কাত হয়ে শোয়া ভালো। গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

মাসিকের রাস্তায় সাদা স্রাব :

- ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এর প্রধান চিকিৎসা।

- নরম সূতি আন্ডারগার্মেন্টস ব্যবহার করা ভালো। তবে সবকথার শেষকথা হচ্ছে প্রতিজন গর্ভবতী নারীরই নিয়মিতভাবে চিকিৎসকের কাছে ভিজিটে যেতে হবে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে এবং তার প্রেস্ক্রাইব করা ওষুধপত্র নিয়মিত খেতে হবে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 
 

Leave a Comment