প্রোস্টেট ক্যন্সার এর লক্ষণ ও কারণ

  • রেজবুল ইসলাম 
  • মার্চ ১৯, ২০১৮

প্রোস্টেট কী?

প্রোস্টেট হলো শ্রোণীচক্রের ভিতরের একটি ছোট গ্রন্থি যা শুধুমাত্র পুরুষদেরই থাকে । আখরোট আকারের এই গ্রন্থি পুরুষাঙ্গ ও মূত্রাশয়ের মধ্যে অবস্থান করে । এটি ইউরেথ্রা বা মূত্রনালী ঘিরে থাকে, যা মূত্রাশয় থেকে পুরুষাঙ্গে মুত্র বহণকারী একটি টিউব বা নল । প্রোস্টেটের প্রধান কাজ হচ্ছে বীর্য উৎপাদনে সাহায্য করা । প্রোস্টেট থেকে এক ধরণের ঘন সাদা তরল পদার্থ তৈরি হয় যা টেস্টিকলে (শুক্রাশয়) উৎপন্ন স্পার্ম (শুক্রাণু)-এর সাথে যুক্ত হয়ে বীর্য সৃষ্টি করে ।

প্রোস্টেট ক্যান্সারের প্রধান লক্ষন সমূহ :

প্রোস্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাই আক্রান্ত হওয়া সও্বেও কয়েক বছর পর্যন্ত আপনি কোন ধরনের লক্ষণ অনুভব নাও করতে পারেন । প্রোস্টেট যখন যথেষ্ট বড় হয়ে মূত্রনালীকে (মূত্রাশয় থেকে মূত্র বহনকারী নল) আক্রান্ত করে, শুধুমাত্র তখনই লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পেয়ে থাকে । এমতাবস্থায়, নিম্নোক্ত বিষয়গুলি আপনার দৃষ্টিগোচর হতে পারেঃ

(১) ঘন ঘন, বিশেষ করে রাতের বেলা বেশিবার প্রস্রাব হওয়া। 

(২) প্রস্রাবের বেগ হলে আটকে রাখতে কষ্ট হওয়া। 

(৩) প্রস্রাব শেষ করতে বেশি সময় লাগা। 

(৪) মূত্র ত্যাগের শুরুতে প্রস্রাব আসতে দেরী হওয়া। 

(৫) প্রস্রাবের দুর্বল প্রবাহ। 

(৬) মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি হয়নি এমন অনুভব হওয়া। 

(৭) তবে এসব লক্ষণ দেখা দিলে সবসময়ই যে তা প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারনে হবে এ ধারনা সঠিক নয় । লক্ষণগুলো অন্যান্য রোগ যেমন বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারপ্লাসিয়া (প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়া)-এর কারনেও হতে পারে ।

প্রোস্টেট ক্যান্সার কেন হয়?

প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারন এখনো অজানা । তবে কয়েকটি বিষয় আছে যা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে ।বয়স- বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ঝুঁকির মাত্রা বাড়তে থাকে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৫০ বছরের অধিক বয়সী পুরুষদের মধ্যে এ রোগ ধরা পড়ে পারিবারিক ইতিহাস- ভাই, বাবা অথবা চাচার মত নিকটাত্মীয় অতীতে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকলে, আপনিও এ রোগে আক্রান্ত হবার ঝুকিতে থাকবেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে কোন নিকট মহিলা আত্মীয় স্তনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকলে তা আপনাকে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রাখবে।

অতিরিক্ত ওজন- সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে যে স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সম্পর্কিত ।
ব্যায়াম- নিয়মিত ব্যায়াম বা শারিরীক চর্চা অনুশীলনকারী ব্যক্তিরা প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কম ঝুঁকিতে থাকেন ।
খাদ্যাভ্যাস – প্রোস্টেট ক্যান্সার ও খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে সম্পর্ক নিরুপণের গবেষণা বর্তমানে চলছে । উচ্চ ক্যালসিয়াম যুক্ত খাদ্য প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে এরকম প্রমাণ পাওয়া গেছে । সেই সাথে, কিছু কিছু গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে, যেসব পুরুষ নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদান, যেমন, লাইকোপিন, সেলেনিয়াম যুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন, তারা প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কম ঝুঁকিতে থাকেন । টমেটো সহ অন্যান্য লাল ফলে লাইকোপিন এবং ব্রাজিলিয়ান বাদামে সেলেনিয়াম থাকে ।

Leave a Comment