অ্যাঞ্জাইনা (Angina)

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮

এই রোগটি এ্যাঞ্জাইনা পেক্টোরিস (Angina Pectoris), কার্ডিয়াক এ্যাঞ্জাইনা (Cardiac Angina), ইস্কেমিক চেস্ট পেইন (Ischemic Chest Pain) বা এ্যাঞ্জাইনাল সিন্ড্রোম (Anginal Syndrome) নামেও পরিচিত। হৃৎপেশীতে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা কমে গিয়ে বুকে ব্যাথার সৃষ্টি হলে একে এ্যাঞ্জাইনা বলে। এটি হৃৎপিণ্ডের ধমনীর একটি রোগ (Coronary artery disease)। এই রোগের ফলে বুকে টান, চাপ ও ভারী ভাব অনুভূত হয়।

এ্যাঞ্জাইনা সাধারণ একটি রোগ। তবে মাঝে মাঝে হজমের সমস্যার জন্ সৃষ্টি হওয়া বুকের ব্যথা থেকে এ্যাঞ্জাইনাকে আলাদা করা যায় না।  কোনো কারণ ছাড়াই বুকে ব্যথা হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।

কারণ
অ্যাঞ্জাইনা হৃদপেশীতে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে হয়ে থাকে। রক্তে উপস্থিত অক্সিজেন হৃদপেশীর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন। যখন হৃদপেশী যথেষ্ট অক্সিজেন পায় না তখন এটি কাজ করতে পারে না এবং তা পুরোপুরিভাবে নষ্টও হয়ে যেতে পারে।

রক্ত প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD) বা হৃৎপিণ্ডের ধমনীর রোগ। হৃৎপিণ্ডের (করোনারি) ধমনীতে চর্বি জমার কারণে ধমনী সরু হয়ে যাওয়াকে এথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) বলা হয়।

এর কারণে রক্তপ্রবাহ হ্রাস পায়। ফলে হৃৎপিণ্ড যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পায় না। ঘুমানোর সময় হৃদপেশীর অক্সিজেনের চাহিদা কম থাকে। কিন্তু বেশি মাত্রায় শারীরিক পরিশ্রম করলে অক্সিজেনের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায় এবং ব্যথা অনুভুত হয়।

এ্যাঞ্জাইনার প্রাকারভেদ- 

স্থিতিশীল এ্যাঞ্জাইনা (Stable angina): স্থিতিশীল এ্যাঞ্জাইনা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম দ্বারা সৃষ্টি হয়। আপনি যখন সিঁড়ি আরোহণ, ব্যায়াম করেন বা হাঁটেন, তখন আপনার হৃৎপিণ্ডের জন্য বেশী রক্ত প্রয়োজন। এই অবস্থায় ধমনীতে চর্বি জমার জন্য রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। শারীরিক অবস্থা ছাড়াও মানসিক চাপ, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ভারী খাবার গ্রহণ এবং ধূমপাননের জন্য এই ধরনের এ্যাঞ্জাইনা হয়ে থাকে। 

অস্থায়ী এ্যাঞ্জাইনা (Unstable angina): যদি ধমনীর ভেতরে জমা চর্বি বা জমাট বাধা রক্ত ধমনীকে ব্লক করে ফেলে তখন হঠাৎ গুরুতরভাবে হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ কমে যায় এবং ব্যথা হয়। এছাড়াও ধমনী আংশিকভাবে ব্লক থাকার কারণে অস্থায়ী এ্যাঞ্জাইনা হতে পারে।

অস্থায়ী এ্যাঞ্জাইনা খুবই ক্ষতিকর। বিশ্রাম নেওয়া বা স্বাভাবিক ঔষধ দ্বারাও উপশম হয় না। রক্ত প্রবাহের উন্নতি না হলে, অক্সিজেন  বঞ্চিত হৃদপেশী নষ্ট (হার্ট অ্যাটাক) হতে পারে। অস্থায়ী এ্যাঞ্জাইনা বিপজ্জনক এবং এর জন্য জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন।

ভেরিয়েন্ট এ্যাঞ্জাইনা (Variant angina): একে ভেরিয়েন্ট এ্যাঞ্জাইনা ছাড়াও প্রিঞ্জমেটাল (Prinzmetal) এ্যাঞ্জাইনা বলা হয়। এটি মূলত করোনারি ধমনীর খিঁচুনিকে বোঝায়, যার দরুন ধমনী সাময়িকভাবে সরু হয়ে যায়। এই সরু ধমনী হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে, যার ফলে বুকে ব্যথা হয়।

আর/এস 

Leave a Comment