গর্ভাবস্থায় আপনারও কি ক্লান্ত লাগে?

  • তাসফিয়া আমিন 
  • অক্টোবর ২০, ২০১৮

গর্ভাবস্থায় ক্লান্ত বোধ করা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার কারণ গর্ভস্থ শিশুর বিকাশ ও বেড়ে ওঠার জন্য আপনার শরীর অতিরিক্ত পরিশ্রম করছে। এ অবস্থায় ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, অবসন্ন বোধ করাটা খুবই স্বাভাবিক। বিশেষ করে প্রথম কয়েক মাসে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার শরীরে হরমোনের ক্রমাগত পরিবর্তন সয়ে যায়। মাঝের তিনমাসে তেমন ক্লান্ত লাগবে না, যদি আপনি কাজে যান বা সাংসারিক কাজেও ব্যস্ত থাকেন তবুও খুব একটা সমস্যা হবে না। বাচ্চা প্রসবের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, ততই আপনি আবারো চোখে পড়ার মত ক্লান্ত বোধ করতে শুরু করবেন। আপনার বাড়তি ওজন শরীরের জায়গায় জায়গায় চাপ দিতে শুরু করবে এবং গর্ভাবস্থার বিদ্যমান লক্ষণ, বাচ্চার নড়া-চড়া এবং হঠাৎ আবেগে উত্তোলিত হবার কারণে আপনি হয়তো রাতে আরাম করে ঘুমাতে পারবেন না।

যদি আপনি যময শিশু ধারণ করে থাকেন, কিংবা স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিকবার গর্ভধারণ করেন কিংবা আপনার যদি কোনো শারীরিক বা গর্ভাবস্থাজনিত সমস্যা, বিশেষ করে রক্তশূন্যতা থাকে তাহলে আপনি আরো ক্লান্ত বোধ করবেন।

ক্লান্ত লাগা প্রতিরোধ করবেন কীভাবে? 

*মর্নিং সিকনেস সত্ত্বেও যতটুকু খেলে ভালো লাগে, ততটুকুই যথাসম্ভব পুষ্টিকর খাবার খেতে চেষ্টা করুন। প্রতিবার খাবারের সময় যেন যথেষ্ট পরিমাণ তাজা খাবার, ফল, শাক-সব্জি আর প্রোটিন থাকে, যাতে করে আপনার ও গর্ভস্থ শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। পানিশূন্যতা থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করুন, কারণ পানির অভাবও আপনাকে ক্লান্ত করে দিতে পারে।

*আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখার চেষ্টা করুন যাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়াতে ( লো ব্লাড সুগার) আক্রান্ত না হন, কারণ তাতেও আপনার প্রচন্ড শুষ্ক লাগবে। একটু পর পর অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং কোনো বেলার, বিশেষ করে সকালের খাবার একদমই বাদ দেবেন না। সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হচ্ছে ব্যাগে হাল্কা খাবার রাখা, যাতে একটু খারাপ লাগলেই কিছু খেয়ে নিতে পারেন। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধের জন্য বেশি করে লোহাযুক্ত খাবার খান, যেমন – লাল মাংস, গাঢ় সবুজ সবজি, কালোজাম ও শুকনো আখরোট লোহার উপযোগী উৎস।

*যতটা সম্ভব বিশ্রাম করুন, যদি আপনি চাকরি করতে যান সেখানেও। যদি বাসায় ছোটো বাচ্চা থাকে, তাহলে তারা দিনে ঘুমালে আপনিও একটু বিশ্রাম করে নিন। যদি অফিসে থাকেন, তাহলে দুপুরে খাবারে সময় উঠে খেয়ে নিন, পানি খান এবং তারপর পারলে বাইরের খোলা হাওয়ায় একটু হাঁটুন। যদি আপনার কাজ যথেষ্ট ছাড় পাবার মতো হয়, তাহলে সপ্তাহে একদিন বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ করুন।

*আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের বাসার কাজে সাহায্য করতে বলুন কিংবা যেটা না করলেও হয় সেটা বাদ দিন। সুপারমার্কেটে না গিয়ে অনলাইনেই শপিং করুন। একদিনে আপনি যথেষ্ট ব্যায়াম আর খোলা বাতাস পাচ্ছেন কি না সেটা নিশ্চিত করুন। হাল্কা ইয়োগা বা রিলাক্সেশন এক্সারসাইজ উপকারে আসতে পারে, কিংবা বাগানেই একটু হেঁটে নিতে পারেন।

Leave a Comment