ডায়রিয়া থেকে হতে পারে কিডনি বিকল!

  • ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
  • মার্চ ১৪, ২০১৯

হঠাৎ করে বিভিন্ন কারণে ইনজুরি বা কিডনি বিকল হতে পারে। তারমধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া। হাসপাতালে প্রায় ডায়রিয়া থেকে হঠাৎ করে কিডনি বিকলের রোগী দেখা যায়। সঠিক চিকিৎসা না হলে এই সময় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অথচ একটু সচেতন হলে হুট করে ডায়রিয়া থেকে কিডনি বিকলের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিডনির বিভিন্ন কার্যকারিতা আছে ।  সেটা যদি হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে যায় অথবা কমে যায় তাকে  একিউট কডিনি ইনজুরি বলে। একিউট কিডনি ইনজুরি ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হয় । আগে এর নাম ছিলো কিডনি ফেইলিউর। কিন্তু র্বতমানে একে বলা হয় একিউট কিডনি ইনজুরি।  

কিডনিতে প্রতিনিয়ত রক্ত পরিবাহিত হচ্ছে, এর জন্য একটা রক্তচাপের প্রয়োজন পড়ে। কোনো কারণে যদি এই রক্তচাপ কমে যায় তখন সমস্যা দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শরীরে যদি কোন কারণে পানিশূন্যতা হয় তখন এই সমস্যা হয়। আমাদের দেশের প্রচলিত কারণ ডায়রিয়া এবং বমি। ডায়রিয়া খুবই পরচিতি রোগ আমাদের এখানে । সুপেয় পানির ব্যবস্থা সব জায়গায় নেই। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী খাবারে ভেজাল দেয়। হোটেলেও পচা বাসী খাবার পরিবেশন করা হয়। এজন্য সারাবছর ডায়রিয়ার প্রচুর রোগী দেখা যায়। ডায়রিয়া হলে শরীরে পানিশূন্যতা হয়। রক্তচাপ কমে যায়, দেখা দেয় আকস্মিক কিডনি বিকল। 

হঠাৎ কিডনি বিকল হলে যদি সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া যায় তাহলে ৮০ থকেে ৯০ ভাগ ক্ষত্রেইে রোগ সর্ম্পূণ নিরাময় হয়ে যায়। কোন সমস্যা দেখা যায়না। তবে অনেকেরই একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে আকস্মিক কিডনি বিকল হলেই ডায়ালাইসিস করতে হবে। এটি ভুল ধারণা। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ডায়ালাইসিস লাগেনা।  কাজেই আকস্মিক কিডনি বিকলের সমস্যায় প্রথমে যে কারণে সমস্যাটি হয়েছে তার চিকিৎসা করতে হবে। কারণগুলোর চিকিৎসা  করার পর কিছু সাহায্যকারী চিকিৎসা নিতে হবে।  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটা ভালো হয়ে যায়।

ডায়রিয়া  হওয়ার পর যদি দেখা যায় ছয় ঘন্টার মধ্যে  প্রস্রাব হচ্ছে না বা হলেও অন্য দিনের তুলনায় খুবই কম তখনই ধারণা করতে হবে যে রোগী  আকস্মিক কিডনি বিকলের দিকে চলে যাচ্ছে। তখন অন্য কোনো উপর্সগ তেমন একটা দেখা যায় না। কিন্তু যখন এই প্রস্রাবের পরমিাণ কমে যায় তখন প্রস্রাবের মাধ্যমে যে বিষাক্ত পর্দাথগুলো বেরিয়ে যায় তা  রক্তের মধ্যে  আস্তে আস্তে  বাড়তে থাকে। ইউরিয়া, ক্রীয়েটেনিন, পটাশিয়াম এগুলো শরীরে বেড়ে যায় । সে সময় রোগীর খাওয়ার রুচি কমে যায়, বমি বমি ভাব হয়। অস্বস্তিকর এক পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রচুর পানি পিপাসা পেতে পারে।  তখন অনেক সময় রোগী বেশি করে পানি খায়। স্যালাইন বেশি করে দেয়া হয় কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরার্মশ ছাড়া এরকম করা কখনই ঠিক নয়। এর ফলে শরীরে পানি জমে যেতে পারে। তখন হাত-মুখ-শরীর ফুলে যেতে পারে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। ফলে  রোগী অনকে সময় খারাপ দিকে চলে যায়। ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকল খুব বেশি দেখা যায় । ডায়রিয়ার রোগীর যদি প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায় অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নাহলে বড় সমস্যা হতে পারে। আর ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে পানি ও খাবারের ব্যাপারে সচতেন হতে হবে।

Leave a Comment