হাড় ও অস্থিসন্ধির যক্ষ্মা

  • ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
  • নভেম্বর ৪, ২০১৯

যক্ষ্মা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত অসুখ। অনেকেরই ধারণা যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসে হয়। এই ধারণা একেবারেই ভুল।শরীরের যে কোন অঙ্গেই যক্ষ্মা হতে পারে। হাড় এবং অস্থিসন্ধিতেও যক্ষ্মা হয়।  কোনো ব্যক্তির ফুসফুসে যক্ষ্মার প্রাথমিক ইনফেকশনের পর যক্ষ্মা জীবাণু রক্তের মাধ্যমে যেকোনো হাড় বা অস্থিসন্ধিতে  ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে কারো কারো হাড় বা  বা অস্থিসন্ধিতে  টিবি বা যক্ষ্মা হতে পারে।

ফুসফুসে যক্ষ্মার  জীবাণু প্রবেশ করে। এরপর  সাধারণত তিন বছরের মধ্যে এ রোগ দেখা দেয়। তবে সবসময় যে তিনবছরের মধ্যেই হবে এমন হয়। ক্ষেত্রবিশেষে তিন বছর পরও এ রোগ দেখা দিতে পারে। সাধারণত হাড় এবং অস্থিসন্ধির যক্ষ্মা  শিশু ও যুবকদের মধ্যেই বেশি দেখা দেয়। যেকোনো হাড় বা অস্থিসন্ধিতে  এ রোগ হতে পারে।তবে  সাধারণত যেসব হাড় বা অস্থিসন্ধি  শরীরের ওজন বহন করে সেখানেই এ রোগ বেশি হয়। মেরুদন্ডের হাড়, হিপ জয়েন্টে, হাঁটুর হাড়ে যক্ষ্মা রোগ বেশি হয়ে থাকে।

মেরুদণ্ডের যক্ষ্মায় কোমর বা পিঠের একটা সুনির্দিষ্ট স্থানে দীর্ঘদিনের ব্যথা থাকে। এর সঙ্গে থাকে  জ্বর এবং  অরুচি  ওজন কমতে থাকে। ব্যথার কারণে রোগী অনেক সময়  স্বাভাবিকভাবে  হাঁটতে পারেন না। কখনো  মেরুদণ্ডে একটু ফোলা অংশও টের পাওয়া যেতে পারে। অন্য অস্থিসন্ধিতে  যক্ষ্মা হলে ব্যাথা এবং ফোলা থাকে।

শুরুর দিকে সাধারণ এক্সরেতে অনেক সময় যক্ষ্মা  ধরা পড়ে না তবে রক্তপরীক্ষা এবং চামড়ায়  মানটু  টেস্ট পজিটিভ থাকলে যক্ষ্মা সন্দেহ করতে হয়। মেরুদণ্ডের এমআরআই পরীক্ষায় রোগ ধরা সহজ হয় তবে এমআরআই দামী পরীক্ষা এবং সব জায়গায় হয়না।

একসময় বলা হতো, ‘যক্ষ্মা হলে রক্ষা নাইএখন বলা হচ্ছে, ‘যক্ষ্মা ভালো হয়পর্যাপ্ত চিকিৎসায় প্রায় সব রোগী নিরাময় লাভ করে চিকিৎসা না নিলে বরং ২৫ ভাগ রোগী মারা যায়  এইডস আক্রান্ত যক্ষ্মারোগীর মৃত্যুহার বেশি যক্ষ্মা রোগের জন্য ওষুধ দীর্ঘদিন খেতে হয়। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক। তাই অভিজ্ঞ ডাক্তারের অধীনে থেকে চিকিৎসা করতে হবে। অনেক সময় অপারেশন লাগতে পারে।

দীর্ঘদিন হাড় বা অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা হলে অবশ্যই চিকিৎসককে দেখাতে হবে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা না করতে পারলে অনেক সময় নার্ভের উপর চাপ পড়ে চিরস্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

কে/এস

Leave a Comment