করোনার কারণে আপনার শিশুর টিকা দেওয়ার তারিখ পার হয়ে যাচ্ছে??

  • তাসফিয়া আমিন
  • এপ্রিল ২৩, ২০২০

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুকে নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়া খুব মুশকিল। এতে অবিভাবকের চিন্তার শেষ নেই। বিশেষ করে সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা বেশি। কারণ, তাদের টিকা এখনো শুরুই করা হয়নি।

শিশুর জীবনের প্রথম টিকাটি হলো বিসিজি বা যক্ষ্মার টিকা। শিশু জন্মের ১৪ দিনের মধ্যে এই টিকা দিতে হয়। ১৪ দিনের মধ্যে না দিয়ে পারলে অন্তত দেড় মাস বয়সের মধ্যে দিতে হয়। নবজাতককে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে টিকা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, ততই ভালো।

আমাদের দেশে দেড় মাস বয়স থেকে ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত মোট পাঁচবার টিকাকেন্দ্রে গিয়ে শিশুকে টিকা দেওয়া হয়।

প্রথম তিনটি টিকা দিতে হয় যথাক্রমেঃ দেড় মাস, আড়াই মাস ও তিন মাস ১৫ দিনে। বিসিজি টিকা ছাড়া এই টিকাগুলো মোটামুটি একই ধরনের।

শেষ দুটি হলো এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকা। এটি দিতে হয় ৯ মাস শেষ হলে এবং ১৫ মাসে। একই ধরনের দুটি টিকার মধ্যে ন্যূনতম এক মাস সময়ের ব্যবধান থাকতে হয়।

এ কারণে আপনার টিকার কার্ডে পরবর্তী যে তারিখে টিকা দেওয়ার কথা লেখা আছে, তার আগে দেওয়া যাবে না। কিন্তু পরে দেওয়া যাবে।

কত দিন পর দেবেন বা কত দিন দেরি করা যাবে, সেটি কোথাও নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। তবে, শিশুর ২ বছর বয়সের মধ্যে আপনাকে সবগুলো টিকা দেওয়া শেষ করতে হবে।

তাই প্রথম তিনটি টিকা দেওয়ার বেলায় আপনার শিশুর বয়স এই মুহূর্তে ২ মাস বা ৪ মাস, যা–ই হোক না কেন, আপনি ৩-৪ মাস অপেক্ষা করতে পারেন, কোনো সমস্যা হবেনা।

আবার আপনার শিশুর বয়স যদি ৯ মাসের বেশি হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে ৯ মাসে যে টিকাটি দেওয়ার কথা ছিল, সেটি ১৩ বা ১৪ মাস বয়সে দিলে ক্ষতি হবে না। কারণ, ১৫ মাসে আপনার বাচ্চার যে টিকা দেওয়ার কথা, তার এক মাস আগে বাকিগুলো দিয়ে ১৫ মাসে শেষ এমআর টিকা দিলেই সরকারি সবগুলো টিকা দেওয়া সম্পন্ন হবে।

আবার যাদের বাচ্চার বয়স ১৫ মাস বা তার বেশি, তাদের ক্ষেত্রে ১৫ মাসের টিকাটি ২ বছর বয়সের মধ্যে যেকোনো সময় দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশের অনেক এলাকায় বাড়িতে গিয়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়িতে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর্মী যেনো মাস্ক পরা থাকেন এবং টিকা দেওয়ার আগে তিনি যেন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

করোনার এই দুর্যোগের মধ্যেও আমাদের দেশে টিকাদান কর্মসূচি এখনো চালু রয়েছে। আপনার এলাকার টিকাদান কেন্দ্র কত দূরে কিংবা সেখানে লোকসমাগম কেমন হয়, সেটি বিবেচনা করেও টিকাকেন্দ্রে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন। অর্থাৎ টিকাদান কেন্দ্র যদি অনেক দূরে হয় এবং সেখানে গেলে যদি করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে না যাওয়াই ভালো। সেক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত নিয়মে দেরি করতে পারবেন।

Leave a Comment