যে কারণে আপনি ওজন কমাতে ব্যর্থ হচ্ছেন ?

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৮

যদিও ওজন কমানোর চেষ্টা সবারই থাকে। কারন পেটে একটা বড় ভুঁড়ি দেখতে যতটা অসুন্দর, ততটায় বিরক্তিকর। সাথে সাথে বিভিন্ন সমস্যা তো থাকেই। কাজে খুব উৎসাহ নিয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করে থাকি আমরা। অথচ মাসের শেষে ওজন মাপতে গিয়ে মুখটা ছোট হয়ে যায়, এক কেজিও ওজন কমেনি এটা দেখে! তাহলে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, কেন এমন হচ্ছে। না কি আপনি নিজের অজান্তে এমন কিছু খাচ্ছেন বা করছেন যা আপনার ওজন কমার বদলে বাড়াচ্ছে। দেখে নিন তো, এই কাজগুলো কি আপনি অজান্তেই করছেন যা আপনাকে ওজন কমাতে ব্যর্থ করছে!

১। আপনি নিশ্চয় সব ধরণের খাবার খাচ্ছেন না। প্রতিবার খাওয়ার সময় একেকটি করে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট অথবা প্রোটিন। এটা মোটেই ঠিক নয়। কারন খাবারের মধ্য কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং পানি – এই সবগুলোরই উপস্থিতি থাকা খুবই জরুরী দেহের ভিটামিনের জন্য। কোনো একটি ভিটামিনের উপাদান বাদ দিয়ে দিলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

২। আপনার জীবনে স্ট্রেস বেশি। দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা এসব কারণে আপনার ওজন বাড়তে পারে। বিশেষ করে মন-মেজাজ খারাপ থাকলে আপনার চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে বেশি ইচ্ছে করতে পারে।

৩। যথেষ্ট পানি পান করছেন কি আপনি? পানি পান করলে শরীর শুধু সুস্থ থাকে তা নই, বরং অতিরিক্ত ক্ষুধাও দমন করতে সহায়তা করে।

৪। আপনি কি শুধুই কার্ডিও ব্যায়াম করছেন। ব্যায়াম হিসেবে ট্রেডমিলে শুধুই দৌড়ানো যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি ওয়েট ট্রেইনিং জরুরী। ওয়েট ট্রেইনিং করলে ব্যায়াম বন্ধ করার পরেও অনেকক্ষণ ধরে ক্যালোরি পুড়তে থাকে।

৫। আপনার যথেষ্ট ঘুম হচ্ছে কি? কারন আপনি যখন ব্যায়াম করেন আপনার দেহের প্রচুর শক্তি খরচ হবে, তার জন্য ঘুম খুব দরকারি। আর ঘুম কম হলে আপনার ক্ষুধাও অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে।

৬। আপনি একাই ব্যায়াম করতে উৎসাহী কি, যদি আপনার স্বামী বা বউকে সাথে নিয়ে যান তাহলে আপনার উৎসাহ আরো বাড়বে। তা না হলে তিনি যদি নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে থাকেন, ব্যায়াম না করে ঘরে শুয়ে-বসে থাকেন তবে আপনারও একা ব্যায়াম করতে মন চাইবে না বা অস্বাস্থ্যকর খাবার আপনিও খেতে থাকবেন। কাজও করতে ইচ্ছে হবে না। ফলে ওজন কমার বদলে বাড়বে।

৭। আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খেয়ে ফেলছেন কি। স্বাস্থ্যকর হলেও কিছু কিছু খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। কারণ বেশি খেয়ে ফেললে এগুলো আপনার ওজন কমানোর বদলে বাড়িয়ে দেবে।

৮। আপনি খালিপেটে ব্যায়াম করছেন। এতে কী হবে জানেন? আপনার মেদ না কমে বরং পেশি ক্ষয় হবে, মোটের ওপর লাভ কিছুই হবে না।

৯। আপনি যথেষ্ট সবজি খাচ্ছেন না। এমনিতেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ফল ও সবজি খাওয়া সবার জন্যই জরুরী। কিন্তু আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে বেশি বেশি করে ফলমূল খেতে হবে, ইচ্ছে না হলেও। এগুলোতে থাকা ফাইবার দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধা দমিয়ে রাখে। সাথে এগুলোতে ক্যালোরিও অনেক কম।

১০। আপনি কাজ করার সময়ে কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। এতে কী হচ্ছে? আপনি নিজের অজান্তেই অনেকগুলো খাবার খেয়ে ফেলছেন। এর চাইতে কোথাও শান্তিমত বসে, সময় নিয়ে এবং মনোযোগ দিয়ে খাবার খান।

১১। আপনি বেশি ঢোলা পোশাক পরছেন। এতে নিজের শরীরের পরিবর্তন আপনার চোখে পড়বে না। শরীরের আকৃতি বোঝা যায় এমন পোশাক পরলে আপনি বুঝতে পারবেন শরীরের কোথায় মেদ জমে আছে এবং সেই মেদ কমাতে চেষ্টা করবেন বেশি করে।

১২। আপনি ডায়েট করছেন হেলাফেলা করে। ওজন কমানোর চেষ্টায় হেলাফেলা করলে আর ওজন কমবে কী করে বলুন? মনে শক্ত ইচ্ছে না থাকলে ওজন ঝরানো সম্ভব হবে না আপনার পক্ষে। তাই যেমন ডায়েটই করুন না কেন, ভালোভাবে করুন।

১৩। খাবারে স্বাদ বাড়াতে আপনি সব সময় এটাসেটা যোগ করে চলেছেন। সস, মেয়োনেজ, পনির, ক্রিম ইত্যাদি। এগুলো যোগ করার ফলে মুহূর্তের মাঝেই যে খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে তা কি আপনি জানেন?

১৪। আপনি সকালে নাশতা করেন না। এতে মোটেই লাভ হয় না। বরং আপনার শরীর আরও ফ্যাট ধরে রাখে। সকালে ভালোমত নাশতা করলে মেটাবলিজম দ্রুত শুরু হয়, ক্ষয় হয় ফ্যাট। এতে সারাদিন আজেবাজে খাবার খাওয়ার ইচ্ছেটাও কমে।

১৫। আপনি খাওয়া শুরু করলে খেতেই থাকেন। কতোবার ভাত নিচ্ছেন, তরকারি নিচ্ছেন, অতিরিক্ত কত টুকরো পিজ্জা খেয়ে ফেলছেন তার দিকে লক্ষ্য করছেন না। তাহলে ওজন কমাবেন কী করে? এছাড়াও অতিরিক্ত লো-ফ্যাট খাবার খেয়েও আপনি নিজের তেমন উপকার করছেন না। বরং লো ফ্যাট ভেবে খেতে খেতে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলছেন।

১৬। আপনি এখনো কোক-পেপসি পান করেন কি। এই কাজটি করার মাধ্যমে শরীরকে প্রচুর ক্যালোরি গ্রহণে বাধ্য করছেন আপনি। কোক পান করলে শরীর তো কোন পুষ্টি পায়ই না বরং ক্ষতি হয় অনেকটা।

১৭। আপনি খাবার খাচ্ছেন না ঠিকমতো। বেশি খাওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি কম খাওয়াও ঠিক নয়। কম খাওয়া হলে বারবার এটাসেটা খেতে ইচ্ছে হবে এবং শেষ পর্যন্ত ফাস্টফুড খেয়ে নিজের সর্বনাশ করবেন আপনি। এছাড়া কোনো বেলার খাবার একেবারে বাদ দেওয়াটাও মোটেই ঠিক নয়।

১৮। আপনি ব্যায়াম করতে যথেষ্ট উৎসাহী নন। অফিস বা কলেজ থেকে ফেরার পথে ১৫ মিনিট হেঁটেই আপনি ভাবেন যথেষ্ট ব্যায়াম হয়েছে। কিন্তু দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট ঘাম ঝরানো ব্যায়াম না করলে ওজন কমানো সহজ হবে না।

১৯। আপনি রেস্টুরেন্টে খেতে ভালোবাসেন। কিন্তু রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে অস্বাস্থ্যকর বা বেশি চিনি ও ফ্যাটযুক্ত খাবারটাই খেতে ইচ্ছে করবে বেশি।

২০। আপনি নিজেকে একেবারেই ছাড় দেন না। সবসময় স্বাস্থ্যকর খাবারই খেতে হবে, এই চিন্তা করে আপনার মনটা খারাপ হয়ে যায়। এর চাইতে সপ্তাহে এমন একটা সময় রাখুন যে সময়ে আপনি একটু চকলেট, একটু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে পারবেন। তাহলে ওজন কমানোর কাজটা অনেক সহনীয় মনে হবে।

 তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment