নিজের সম্পর্কে জানতে চান ? এই কৌশলটি অনুসরণ করুন। 

  • ফারজানা আক্তার
  • মার্চ ৫, ২০২২

অনেক সময় আমরা নিজেরা নিজেদেরই ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। মনে হয় এই আমাকে আমি হয়তো ঠিক চিনে বুঝে উঠতে পারছি না। আজকে এমন একটি মনোবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো যা থেকে শুধু নিজের সম্পর্কে নয়, আশেপাশের মানুষের সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। এটি একটি পার্সোনালিটি টেস্ট। এই টেস্টে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হয়। আপনি যদি সৎ উত্তর দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে। 

আরো দেখুন : জরায়ুতে টিউমার কেন হয় ? প্রাথমিক উপসর্গগুলো কী কী ?

এই টেস্টের মাধ্যমে আপনি নিজের সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয়ও জানতে পারবেন। যেমন : আপনি কিসের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন! কিভাবে মানসিক শক্তি লাভ করেন! চারপাশ থেকে কোন প্রক্রিয়ায় তথ্য গ্রহণ করেন! ইত্যাদি।  আপনার দুর্বল পয়েন্ট, সবল পয়েন্ট, আপনার জন্য উপযুক্ত জীবনসঙ্গী বা চাকরি সকল বিষয়ে ধারণা দিবে।  উন্নত দেশে চাকরির ক্ষেত্রে চাকরি প্রত্যাশীদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা পেতে এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হয়।  

অনেক সাইকোথেরাপিস্টও তার পেশেন্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করেন। এটি ১০০% সঠিক তথ্য দেয় সেটি বলা যাবে না, তবে বেশ কার্যকরী সেটা নিশ্চিত বলা যায়।   এই পদ্ধতিতে আপনার উত্তরের উপর নির্ভর করে চারটি বর্ণের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করা হয়। 

চারটি বর্ণ আপনার ব্যক্তিত্বের চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেয়। যেমন : ISTP, ENFJ, INTP, ESFJ...এই রকম মোট ১৬টি টাইপ রয়েছে।  চারটি বর্ণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক এখন। 

আরো দেখুন :  ত্বকের ধরণ বুঝে উপটানে হোক আপনার রূপচর্চা...

আপনি কিভাবে মানসিক শক্তি লাভ করেন ? ( প্রথম বর্ণ E / I ) : এখানে E মানে Extrovert অর্থাৎ বহির্মুখী ব্যক্তিত্ব এবং  I মানে Introvert বা অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্ব। যারা বহির্মুখী মানুষ তারা নানান ধরণের মানুষের সাথে মিশে মানসিক শক্তি লাভ করেন। এই ধরণের মানুষ একা থাকতে পারেন না বা একা থাকলে এরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।  যারা অন্তর্মুখী মানুষ তারা একা থেকে মানসিক শক্তি লাভ করেন। মানুষদের সাথে মিশতে তাদের বেশ অস্বস্তি হয়। এই অস্বস্তির কারণে তারা মানসিক শক্তি লাভ করতে পারে না।  এখন আপনি মিলিয়ে নেন তো আপনি এক্সট্রোভার্ট, নাকি ইন্ট্রোভার্ট ? মানে একা থাকতে পছন্দ করেন, নাকি সকলের সাথে মিলেমিশে থাকতে ?

আরো দেখুন : গর্ভাবস্থায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়গুলো জেনে নিন...

আপনি কিভাবে চারপাশ থেকে তথ্য গ্রহণ করেন ? ( দ্বিতীয় বর্ণ  S / N ) : এখানে  S মানে হলো Sensor অর্থাৎ এই ব্যক্তিত্বের মানুষেরা বাস্তববাদী হয়। তারা তাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তথ্য গ্রহণ করাকে প্রাধান্য দেয়। তারা কমন সেন্স এবং অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তারা বর্তমানে বসবাস করে। ভবিষৎ নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। 

N এর অর্থ হল Intuitive অর্থাৎ এরা কল্পনাপ্রবণ হয়। এরা নিকটে থাকা তথ্য এবং ইম্প্রেশনকে প্রাধান্য দেয়। ভবিষৎকে প্রাধান্য দেন এবং সমস্যা সমাধানে নতুন নতুন ক্রিয়েটিভ আইডিয়া নিয়ে আসেন। 

আপনি S, নাকি N ক্যাটেগরির ? 

আপনি কিসের উপর  ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেন ? ( তৃতীয় বর্ণ  T / F ) : এখানে T মানে Thinker যিনি মূলত যুক্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তার কাছে নিজে সঠিক হওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি সামাজিক সম্পর্কের থেকে বস্তুগত বিষয়কে বেশি প্রাধান্য দেন। এরা ঠান্ডা মাথার মানুষ এবং কম বন্ধুসুলভ। 

F এর অর্থ হল Feeler যারা অনুভূতির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের কাছে সঠিক হওয়ার চেয়ে কার্যকরী হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরা অনেক সেন্সিবল পার্সন হয়ে থাকে। এরা অল্পতে রেগে যায় কিন্তু বেশ বন্ধুসুলভ। এদের নিকট সম্পর্ক বেশ গুরুত্ব পায়। 

আপনি T, নাকি F ক্যাটেগরির ?

আরো দেখুন : অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে মৃত্যুর কারণ...

আপনি কিভাবে জীবনযাপন করেন ? ( চতুর্থ বর্ণ P / J ) : এখানে P মানে Perceiver অর্থাৎ আপনি নতুনকে খুব সহজে গ্রহণ করতে পারেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী নিয়মকানুন সহজে পরিবর্তন করার পক্ষে। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে যদি দিনের মধ্যে বেশ কয়েকবার নিয়ম পরিবর্তন করতে হয় আপনি অনায়াসে তা করতে পারবেন। 

J এর মানে Judger অর্থাৎ আপনি পরিবর্তন একেবারেই পছন্দ করেন না। নিজের সবকিছু আগে থেকে পরিকল্পনামাফিক সাজিয়ে রাখেন। যদি কোন কারণে তা পরিবর্তন করতে হয় আপনি সেটা সহজে মেনে নিতে পারেন না। নিজের নিয়মকানুনের ব্যাপারে আপনি বেশ কড়া। নতুনত্ব আপনাকে বেশ বিরক্ত করে।  

আপনি P, নাকি  J ক্যাটেগরির ?

নিজের সম্পর্কে কতটুকু জানতে পারলেন ? অথবা আপনার পরিচিত কারো সাথে মিলে গেলো ? আপনি কোন ক্যাটেগরির সেটা কমেন্ট করুন অথবা আপনার পরিচিত কারো সাথে মিলে গেলে তাকে মেনশন করুন। 

আরো দেখুন : টমেটোর ৭ স্বাস্থ্য উপকারিতা ...

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment