কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকাল : অবিভাবকদের করণীয়

  • নাজিয়া হক
  • নভেম্বর ১৯, ২০১৮

সেদিন স্কুল শেষে মায়মুনা বাসায় আসলে তার মা সালোয়ারে হালকা একটু রক্তের দাগ দেখতে পেলেন। বুঝলেন তার ছোট্ট মায়মুনার শারীরিক পরিবর্তনের সময় চলে এসেছে। খাবার টেবিলে বসে মায়মুনাকে বিষয়টা খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বললেন। আজ থেকে তার শারিরীক এবং মানসিক কিছু পরিবর্তন আসবে,কিভাবে তা সামাল দিতে হবে, সবকিছু গুছিয়ে বললেন। সেই একই পরিবর্তন সায়মার মধ্যে দেখতে পেলে তার মা তাকে খুব কঠিন স্বরে মানা করলেন যে, আজ থেকে তার খেলাধুলা করা নিষেধ। বেশি দৌড়াদৌড়ি করা যাবে না। অনেক সাবধান থাকতে হবেসহ নানান কথা,যা শুনে সায়মা ভেতরে ভেতরে এতোটাই ভয় পেয়ে গেলো যে, ভাবলো বোধ হয় তার কোনো বড় ধরনের অসুখ হয়েছে।

আহনাফের গলার স্বর হঠাৎ করেই যেন বড়দের মত হয়ে গেলো, কিছুটা কর্কশ। তার শারীরিক এবং মানসিক কিছু পরিবর্তনও সে বুঝতে পারছিল, কিন্তু কারো সাথেই সে শেয়ার করতে পারছিল না। অযথাই তার মেজাজ বিগড়ে থাকে। বাসার সবাইও কেমন যেন বকাঝকা করে। এই যে ৩টা কিশোর-কিশোরীর পরিবর্তনগুলো দেখা যাচ্ছে, সবগুলোই হচ্ছে তাদের বয়ঃসন্ধিকালের শুরুর সময়। একজন শিশুর সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল এবং বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

- খুব নাজুক একটা সময় হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকাল।

- তিন কাল জানি (অতীত-ভবিষ্যৎ-বর্তমান)

- বয়ঃসন্ধিকাল আবার কোন কাল?

এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। খুব সহজ ভাষায় যদি বলি, বয়ঃসন্ধি  শব্দটির অর্থ হচ্ছে একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বা ধাপ যার মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর  একজন  প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় এবং এই সময়টাকে বয়ঃসন্ধিকাল বলা হয়। আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের হরমোন রয়েছে যা আমাদের দেহের বৃদ্ধি, বিপাকক্রিয়া, যৌনাঙ্গের পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। মস্তিষ্কে গোনাডে (ডিম্বাশয় ও  শুক্রাশয়) নামক এক ধরনের হরমোনের সংকেত যাবার মাধ্যমে বয়ঃসন্ধিকালের সূচনা ঘটে। গোনাড বিভিন্ন ধরণের হরমোন উৎপাদন শুরু করে যার ফলে  মস্তিষ্ক, অস্থি, পেশি, ত্বক, স্তন, এবং  জনন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের  বৃদ্ধি শুরু হয়। বয়ঃসন্ধির মধ্যভাগে এই বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং বয়ঃসন্ধি শেষ হবার মাধ্যমে এই বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয়। বয়ঃসন্ধির শুরুর পূর্বে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য প্রায় সম্পূর্ণটাই বলতে গেলে শুধু  যৌনাঙ্গের  ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে। 

ছেলে ও মেয়ের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন : সাধারণত ৯-১০ বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ৯-১০ বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধিকালীন বিভিন্ন পরিবর্তন শুরু হয়ে  তা ১৪-১৫ বয়স পর্যন্ত ঘটে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে তা সাধারণ ১০-১১ বছর বয়স থেকে শুরু হয়ে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত হয়ে থাকে। হরমোনের তারতম্যের কারণে, পুষ্টি, বংশগতি(জীনের বৈশিষ্ঠ) এইসব কারণে একেক জনের শারীরিক পরিবর্তন একেক রকম হয়ে থাকে। কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়ে ওঠে, কেউবা কিছুটা দেরিতে। এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা বা ঘাবড়ে না গিয়ে খুব সুন্দরভাবে এই সময়টাকে সামাল দিতে হয়। বয়ঃসন্ধিকালের সাথে একটা ছেলে এবং মেয়ের শুধু শারীরিক নয়, সম্পুর্ণ মানসিক বিকাশ নির্ভর করে। এ সময় ছেলে-মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তন হয় । সবার ক্ষেত্রে পরিবর্তনগুলো একই সময়ে নাও হতে পারে। তবে পরিবর্তনগুলো খুব স্বাভাবিক।

বয়ঃসন্ধিকালীন মানসিক পরিবর্তন : বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায় একই রকম কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। এ সময় তাদের নিজেদের শরীর সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে উঠে অনেক, শরীরের পরিবর্তন বিষয়ে জানতে চায়। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ শুরু হয়। নিজেদের বড় ভাবতে শুরু করে। ছেলেমেয়ে অজানা জিনিস জানার বিষয়ে কৌতূহলী হয়। চেহারা, সৌন্দর্য ও পোশাক সম্পর্কে সচেতন হয় এবং অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। কেউ আবার একা থাকতে পছন্দ করে, কারো সামনে যেতে চায় না। আবার এ বয়সেই মন চঞ্চল হয়ে ওঠে । দ্বিধা-দ্বন্দ্ব,আবেগ আর অস্থিরতা কাজ করে । কখনো মন বিষন্ন হয়ে ওঠে, আবার কখনো মন খুশিতে ভরে যায় । কেউ হয়ে ওঠে অভিমানী, কেউবা কৌতূহলী। তবে এই পরিবর্তনগুলো সাময়িক । বড় হওয়ার সাথে সাথে সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।

কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকাল কৌতূহলের বয়স। নিজের শরীর সম্পর্কে জানতে চাওয়া ভালো এবং এতে লজ্জা পাবার কিছু নেই। কিছু জানতে ইচ্ছা করলে বা কিশোর-কিশোরীরা কোনো সমস্যায় পড়লে বাবা-মা বা বড়দের সাথে এ ব্যাপারগুলো আলাপ করতে অস্বস্তি বোধ করে এবং সমবয়সি বা বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে। এ বয়সে ছেলেমেয়েরা বন্ধুদের প্রতি বেশি নির্ভরশীল হয়, বন্ধুদেরকে বেশি গুরত্ব দেয়, বন্ধুদের দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। বন্ধু তাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে । তাই ভাল বন্ধু নির্বাচন করা খুব দরকার। পাশাপাশি বাবা-মাকে ঐ সময়ে ছেলে-মেয়ের সাথে যতটা সম্ভব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। 

বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক পরিবর্তনর ও কারণ : বয়ঃসন্ধিকালের সময়ে শরীরে স্বাভাবিকভাবেই অনেক পরিবর্তন আসে। কারো এ পরিবর্তন আগে শুরু হয় আবার কারোও বা পরে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের শরীরের এসব পরিবর্তন হরমোন নিঃসরণের কারণে হয়ে থাকে। হরমোন হচ্ছে শরীরের ভেতরে তৈরি এক ধরনের গ্রন্থিরস যা দেহকে সক্রিয় রাখে এবং দেহের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করে। শরীর বেড়ে ওঠার এ ব্যাপারটা অনেকটাই নির্ভর করে শরীরের গঠনের ওপর। তবে এখানে সঠিক পুষ্টিরও বেশ প্রভাব রয়েছে।

একজন কিশোরীর বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তনগুলো কিছুটা জটিল ও সুন্দর : মেয়েটি ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছে গেলে, তখন তার শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়। যেমন উচ্চতা বাড়ে, মাসিক শুরু হয়, স্তন বড় হয়, বগলে ও যৌনাঙ্গে লোম গজায়। কোমর সরু হয়, উরু ও নিতম্ব ভারি হয়, জরায়ু ও ডিম্বাশয় বড় হয়। এই পরিবর্তনগুলোই হচ্ছে মেয়েদের বড় হওয়ার লক্ষণ। বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মাসিক বা ঋতুস্র্রাব। মাসিক একটি মেয়ের শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা সাধারণত ১০-১৩ বছর বয়সে শুরু হয় এবং স্বাভাবিক নিয়মে ৪৫-৪৯ বছর বয়স পর্যন্ত চলে। অনেকের শরীরের গঠনের কারণে ৯ বছর বয়স থেকেও মাসিক স্রাব শুরু হতে পারে। শুরুর বছরগুলোতে মাসিক কিছুটা অনিয়ম হতে পারে এবং তলপেটে ব্যথা হতে পারে।

স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিমাসে একটা নির্দিষ্ট সময় চক্রাকারে(প্রতি ২৪ থেকে ৩২ দিন অর্থাৎ গড়ে ২৮ দিন পর) মাসিক হয়ে থাকে এবং তা ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে এ ২৮ দিনের চক্রটি কম বা বেশি হতে পারে। মাসিক শুরু হওয়ার দিন থেকেই মাসিকচক্র শুরু হয়। মাসিকের প্রথম দিন থেকেই ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি হতে শুরু করে। মাসিক হওয়ার পরে মেয়েরা প্রজননক্ষম অর্থাৎ সন্তান ধারণের ক্ষমতা লাভ করে। মাসিক নিয়ে ভয় বা লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। মেয়েরা যখন বড় হয় তখন প্রতি মাসে ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বাণু বের হয়ে ডিম্ববাহী নালীতে আসে। একই সময় জরায়ুতে রক্তে ভরা নরম পর্দা তৈরি হয়। যদি এ সময় যৌনমিলন হয় তাহলে শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ভ্রুণ তৈরি হয়। এই ভ্রুণ রক্তে ভরা নরম পর্দায় গিয়ে বসে ও ধীরে ধীরে বড় হয়ে শিশুতে পরিণত হয়। যদি শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর মিলন না হয়, তাহলে এই পর্দার আর প্রয়োজন হয় না। তখন এই রক্তে ভরা পর্দা ডিম্বাণুসহ মাসিক হিসেবে যোনিপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে। কোনো আঘাত বা অসুখের কারণে এই রক্ত পড়ে না।

এ সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখতে হবে এই সময়। স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড, পরিষ্কার কাপড় বা তুলা ব্যবহার করতে হয়। পরিচ্ছন্ন শুকনা কাপড় পরতে হবে অথবা একই কাপড় যদি বারবার ব্যবহার করা হয় তবে সেগুলো সাবান দিয়ে ধুয়ে রোদে/বাতাসে শুকাতে হবে। মাসিক চলাকালীন সময়ে নিয়মিত গোসল করতে হবে, পরিষ্কার জামা-কাপড় পরতে হবে, পুষ্টিকর সব ধরনের খাবার খেতে হবে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হবে। এ সময় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তা না হলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।মাসিকের সময় কারো কারো কোমরে বা পেটে অল্প অল্প ব্যথা হতে পারে। সাধারণত জরায়ুর মাংসের তারতম্যের কারণে ঘটে। ফলে তলপেটে বা কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। এটা স্বাভাবিক, তবে অতিরিক্ত ব্যথা হলে ডাক্তারের চেকাপ করানো উচিত।  তাছাড়া প্রথম প্রথম মাসিক হলে মেয়েরা অস্বস্তিতে ভুগতে পারে। এ সময় বিশ্রাম করতে হবে, প্রচুর পানি পান করতে হবে, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করাই ভালো।

ছেলেদের ক্ষেত্রে : এ সময় শরীরে হরমোন বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। দাড়ি আর গোঁফ গজাতে শুরু করে। বুকে,বগলে,যৌনাঙ্গের চারিদিকে লোম দেখা দেয়। এটা স্বাভাবিক। এগুলো ঘটে সাধারণত টেস্টোস্টেরোন বলে একটি হরমোনের প্রভাবে। এই সময়ে ছেলেরা একটু বেশি ঘামে, হরমোনের সক্রিয়তা তার একটা কারণ। এতে লজ্জার কিছু নেই। বরং এটি কমাতে হলে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার। এই সময়ে যৌনাঙ্গ বড় হয় এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। অনেক সময়ে ঘুম থেকে কেউ খেয়াল করে যে বিছানাটা ভিজে ভিজে। একে স্বপ্নদোষ আখ্যা দেওয়া হলেও এতে দোষের কিছু নেই। ঘুমন্ত অবস্থায় বীর্যপাত কোনও অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়, এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে এবং বয়ঃসন্ধির একটি লক্ষণ। তবে যদি যৌনাঙ্গে কোনও ব্যথা বা যৌনাঙ্গের নিচে অণ্ডকোষে ব্যথা হয়, তাহলে ডাক্তারকে সেটা জানানো দরকার।

অভিবাবকদের করণীয় : বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশ দ্বিধা, ভয়সহ নানা বিষয় একই সাথে কাজ করে থাকে। তারা জগতের নিয়ম-কানুনের সাথে নিজের চিন্তাভাবনার আদৌ কোনো মিল খুঁজে পায় না আর এই দোটানা, অস্বস্তিবোধ থেকেই চারপাশের পরিবেশের সাথে  তারা সহজেই নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। তাই প্রথমেই তাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে আপনাকে সনাক্ত করতে হবে যে, ঠিক কোন বিষয়টি তাদেরকে বিচলিত করছে। এরপর যথাসম্ভব উষ্ণতা ও সহানুভূতির সাথে তাদেরকে কাছে টেনে নিয়ে তাদের কাছ থেকে বিষয়গুলো জানতে হবে এবং সেসব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে করণীয় পরামর্শ দিতে হবে। জানার চেষ্টা করুন তাদের মাঝে কী ঘটছে, তাদের মন মানসিকতা বিভিন্ন কারণে বিচলিত থাকে। যেমন বিষণ্ণতা  বা সহজেই কোনো কিছুতে আনাগ্রহ এবং চারপাশের পরিবেশ এবং রীতিনীতির জন্য নিজেকে বেমানান মনে করা।

একটু ভালোভাবে খেয়াল করে তার ঠিক কোন বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে তা সনাক্ত করুন। এরপর নিজ থেকেই তাকে সেই বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। আর কোন পরিস্থিতি তারা কীভাবে সামাল দিবে সে বিষয়েও ধারণা দিন। সাধারণত পরীক্ষার খারাপ ফলাফল, স্কুল-কলেজ বা খেলার সাথীদের সাথে মন কষাকষি, মা-বাবার সাথে যুক্তিতর্ক এবং ধীরে ধীরে অসামাজিক হয়ে যাওয়া। তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ  সম্পর্ক গড়ে তুলুন।হয়তো বা আপনার সন্তান জানে যে, কোন বিষয়ে তার সমস্যা হচ্ছে। তবে লজ্জার কারণে বা আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখবেন তা ভেবে আপনাকে বলছে না। সেক্ষেত্রে একান্তে  তার সাথে কথা বলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন এবং সমস্যার সমাধান করুন।

এ সময় তারা না ছোটোদের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে,না বড়দের সাথে। এ সময় তাদের তিরষ্কার, মজা না করে বরং তাদের পাশে রাখুন সব সময়। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিষয়টি ঘরে প্রাধান্য দিন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার, শরীরচর্চা এবং নিয়মিত রাতে ৮ ঘণ্টা বা এর বেশি সময় ঘুমানোর অভ্যাসটি পরিবারের সকল সদস্যদের মাঝে গড়ে তুলুন। আপনার কিশোর বয়সী সন্তানের প্রতি অধিক লক্ষ্য রাখতে  তার স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলুন। তার বন্ধুত্ব নির্বাচনে ক্ষেত্রে তাকে খুব সুন্দভাবে বুঝিয়ে বলুন। অনেক সময় তারা লজ্জাবশত বাবা মায়ের সাথে অনেক কিছু শেয়ার করতে না পেরে বন্ধুর সাথে শেয়ার করে থাকে, এ ক্ষেত্রে বন্ধু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মতো করে বোঝার চেষ্টা করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিশোর-কিশোরীদের তাদের ভুলের জন্য বকঝকা করা হয়। ফলে তারা মনে করে যে, কেউই তার মন মানসিকতা বুঝতে পারে না। তার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন এবং বুঝতে দিন যে, আপনি অনুভব করতে পারছেন যে আসলেই ও কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আপনাদের  দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। 

Leave a Comment