‍‍`একটা ভাঙ্গা মনের কথা‍‍`

  • সুমনা বাগচী
  • ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১

ছোটো বেলা থেকেই আমরা প্রত্যেকেই বাড়িতে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে বড়ো হই।পড়াশোনা,নিজেদের পছন্দের জিনিস কে আমরা গুরুত্ব দিতে শিখি। এভাবেই সিড়ি র ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা। প্রত্যেকটি বাড়িতে একজন সন্তান কে যথেষ্ট যত্ন করে আর বাবা মায়ের সাধ্য অনুযায়ী তাকে সমস্ত সুবিধা দিয়ে বড়ো করা হয়। কিন্তু ছন্দপতন ঘটে যখন হটাত কোনো বিপদ এসে দাঁড়ায়।আজও সমাজ বলতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা এসে দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়।

এরকম অনেক ঘটনার নীরব সাক্ষী একটা ভাঙ্গা মন। খবরের কাগজ কিংবা নিউজ চ্যানেলে হতাশ মৃত্যুর ছবি গুলো মনন শক্তি কে হারিয়ে দেয়। এমনই একটি মেয়ের কথা বলবো আজকে। যে শিক্ষিত,সমাজে প্রতিষ্ঠিত আর সুন্দর মনের মানুষ। বাবা মা ও পরিবারের ভালোবাসায় সে বড়ো হয়। নিজের পছন্দের পাত্র কে পছন্দ করে।তাদের বিবাহ হয়। শ্বশুর বাড়িতে তিন ননদ আর শাশুড়ির গঞ্জনার প্রকৃতি ছিল ভিন্ন। কারণ যন্ত্রণা দেবার পরিভাষা আলাদা। কোনো কোনো পরিবার চিৎকার করে বলে আবার কোনো কোনো পরিবার হাব ভাবে,ছোটো ছোটো যন্ত্রণাদায়ক ব্যবহার মাধ্যমে তাকে মানসিক চাপ দিতে শুরু করে।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত ওজন কমাতে ৭দিনের ডিমের জাদুকরী ডায়েট প্লান!

শ্বশুর বাড়ি অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বচ্ছল ছিল। যদিও তাঁদের এই স্বচ্ছলতা একদিনে আসে নি। সেটারও অনেক কঠিন ধাপ ছিল।কিন্তু স্বচ্ছলতা তাঁদের মানবিকতা কে ছিনিয়ে নিয়েছিল। এখানে যার হাত ধরে মেয়েটি এগিয়ে এসেছিল তার সদাই ভালো থাকার উদ্দেশ্যে মেয়েটি কষ্ট পেতে শুরু করে। এ কি মানুষ? যার কোনো বক্তব্য নেই। বরং সে নিজেই বাবা মা এর উপর কিছু না বলতে পেরে শারীরিক অত্যাচার শুরু করে তার স্ত্রীর উপর। এভাবেই,চলতে চলতে অর্থাৎ জোড়া তালি দিয়ে সংসার চলতে থাকলো।কর্মরত স্ত্রী,এত কিছু হওয়া সত্বেও স্বামী কে সাহায্য করতো।কারণ সেখানে মন যে বড্ড দূর্বল ছিল।মন তো ভালোবাসা হারাতে চায় নি। নিজের টাকা,গহনা সব কিছু দিয়ে সে স্বামী কে আর তার ভাঙ্গা, মুচড়ানো পরিবার কে সাহায্য করেছে।

স্বামী ঋণে জর্জরিত। স্ত্রী হিসাবে সে কখনোই তাকে একদিনও সাহায্য করে নি তা না বরং স্বামী তাকে ব্যবহার করে গেছে। এখানে মনে হতেই পারে মেয়েটি কি বোকা, তাইনা? হ্যা সে সত্যি বোকা কারণ সে ভালোবেসেছিলো,সংসার বেঁধেছিলো আর তার সন্তান কে গুরুত্ব দিয়েছিল।তাই শত অত্যাচারে সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারতো না। আসলে এটা সত্যি কথা নারী মনের হদিশ পাওয়া কঠিন।তাঁর অনুভূতি ব্যাখ্যা করা কঠিন।সে যাকে ভালোবাসে তার মন আত্মা সেখানেই সঁপে দেয়।সেই জন্যই অনেক ভাঙ্গা মনের কথা অনেকেই জানতে পারে না।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মহিলারা যেসব খাবার খাবেন না!

এরকম ঘটনা আমাদের আশেপাশেই আছে।এমন কঠিন বন্ধন যা শেষ করতে চাইলেও শেষ হয় না।কারণ মন গভীর ভাবে জড়িয়ে থাকে। ওটাই যেনো অবলম্বন, ওটাই যেনো বেঁচে থাকার একমাত্র কারণ। এক্ষেত্রে বেঁচে থাকাটা ঠিক মরে মরে বেঁচে থাকা.... এক্ষেত্রে মনে রাখবেন আপনার ওপর মানুষটি কে বোঝাতে হবে,নারী শক্তিহীন না,তাদের মনন শক্তি অনেক কঠিন।যা সহজে ভাঙ্গা যায় না।ভালোবাসার জন্য তারা আত্মত্যাগ করতে পারে ঠিক কিন্তু অবমাননা মানতে পারে না। মনে রাখবেন,নিজের জন্য বাঁচতে হবে,ভালো থাকতে হবে।

কারণ আপনার ভালো থাকার অধিকার আছে।আপনি কেনো বঞ্চিত করবেন নিজেকে এই সুন্দর পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে বাঁচার জন্য? কোথাও নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন। নারী সর্বশক্তিমান,সে এগিয়ে যেতে পারে,আবার হাতে অস্ত্র তুলতে পারে। তাই নারী দূর্বল নয়। মনে রাখবেন... আপনি হেরে যাওয়ার মানুষ নয়। তবে নিজেকে ব্যবহার হতে দেবেন না। সেখানে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়.... আমাদের মন ভাঙ্গে ঠিক,আবার সেই মন জুড়ে নেবার দায়িত্ব আমাদের।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চার ওজন বাড়ানোর জন্য নিরাপদ ২টি খাবার!

কারণ আমরা বুঝি ভাঙ্গা মনের যন্ত্রণা। তাই নারী,তুমি মন থেকে হও কঠিন,নির্ভরতা নিজের উপর হোক আর সেটাই তোমার "জয়"।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment