ব্যস্ততম দুনিয়ার কিছু অচেনা রূপ আপনি মিস করছেন নাতো?

  • আল আমীন 
  • এপ্রিল ২৮, ২০১৮

সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা, বিছানা ছাড়া, সকালে হাঁটা এসবের গুণাগুণ আমরা সবাই কমবেশি জানি। যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন, তাদের বেশিরভাগই সকালবেলাটাকে বেছে নেন শারিরীক কসরতের জন্য। কেউ জিমে যান, কেউ বাসায় হালকা ব্যায়াম করেন, কেউ হাঁটতে বের হন। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, সকাল বেলায় একটু সাইকেল চালনা আপনার পুরো দিনটাকে ভাল করার জন্য কতটা ফলপ্রসূ?
সকাল বেলায় ঘুম ওঠাটাই মনের ভেতর আলাদা এক প্রশান্তি এনে দেয়। যদিও আমাদের এই আধুনিক জীবনমুখী যান্ত্রিক জীবনে নিতান্ত অফিস, গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা ক্লাস-ভার্সিটি না থাকলে ভোরে অনেকেই উঠি না। কিন্তু সকাল ভোরের গ্রাম বলুন আর শহর বলুন প্রত্যেক জায়গারই আলাদা একটু মায়া রয়েছে। আর সাথে যদি থাকে সাইকেল... 

সকালের আবহ প্রথমেই আপনাকে মনের ভেতর এক ফুরফুরে অনুভব ছড়িয়ে দিবে, তারপর ধীরে ধীরে সূর্য ওঠার দৃশ্য, পাখীদের বিভিন্ন ঢঙয়ের সুর আপনাকে রীতিমত মুগ্ধ করবে। সারাদিনের ব্যস্তসমস্ত দুনিয়ার এই এক অচেনা রূপ যা আপনি মিস করে এসেছেন এতদিন। গবেষণায় বলা হচ্ছে, সকালের এই হালকা রোদ ভিটামিনসমৃদ্ধ এবং যৌনজীবনের জন্যও এই রোদ উপকারী বটে! যাদের যৌনজীবনে জটিলতা রয়েছে, তারা বেশ উপকার পেতে পারেন! 

যদিও আগে বলা হতো, সাইক্লিং যৌন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, "অতীতের কয়েকটি তত্ত্বে বর্ণনা করা হয়, সাইক্লিং পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। সেসব তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতেইএ গবেষণা। এতে উঠে এসেছে- সাইক্লিং পুরুষের তো কোনো ক্ষতি করেই না, বরং আরও উপকার করে। এটি স্থূলতার ঝুঁকি কমায়। পাশাপাশি শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। গবেষণা প্রবন্ধটি ইউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অ্যাথলেটদের তিন ভাগ করে (২ হাজার ৭৭৪ সাইক্লিস্ট, ৫৩৯ সাঁতারু ও ৭৮৯ দৌড়বিদ) গবেষণাটি চালানো হয়। তাদের নানা ধরনের যৌনসংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়। 

এতে দেখা যায়, সাইকেল চালালে চালকদের যৌন স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় না। উল্টো শারীরিকভাবে আরও ফিট থাকা যায়। গবেষকরা বলছেন, সাইক্লিস্টদের ওপর বাইসাইকেল চালানোর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই। বরং এটি যৌনসংক্রান্ত অনেক সমস্যা প্রতিরোধ করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেঞ্জামিন ব্রেয়ার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এ ফল সাইক্লিস্টদের উৎসাহিত করবে। নিয়মিত সাইক্লিংয়ে হাড়ের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। রক্তসঞ্চালন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রবাহ ঠিক থাকে। পেটে মেদ জমার শঙ্কা থাকে না। বরং সাইকেল চালনায় কমে শরীরের অতিরিক্ত মেদ। সাহায্য করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে।"

সাইকেল চালনা আমাদের হার্ট, ফুসফুস এবং রক্তচাপের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। আর এভাবে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে, হ্রাস পায় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি! এবং আমাদের শ্বাস এবং হার্ট বিট উন্নত হয়। সাইকেল চালনা শুধু পায়ের ব্যায়াম নয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে আমাদের শরীরের প্রতিটি পেশিতে চাপ পড়ে, ফলে পেশি সুগঠিত ও শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।

সারা দিনে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়, আর সুষ্ঠভাবে দিনের সব কাজ ঠিকঠাকমতো করার জন্য যে স্ট্যামিনা প্রয়োজন হয়, নিয়মিত সাইক্লিং থেকে আমরা সেই কর্মস্পৃহা পেতে পারি। যা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে দ্রুত পৌঁছতে সাহায্য করবে। আপনি যদি খোলা আকাশের নিচে, গাছে ঘেরা রাস্তায় সাইকেল চালান, তাহলে প্রকৃতির সাথে নির্ঘাত বন্ধুত্ব তৈরি হবে। আর সেটা আপনাকে সাহায্য করবে মাথা থেকে দুশ্চিন্তাগুলো বাতাসের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে। ফলে মানসিক চাপ কমানোর জন্য এটি খুব ভালো একটি উপায় বলাই যায়। 
 

Leave a Comment