ঝালের তেজ কমাতে যা করবেন 

  • ওমেন্স কর্নার
  • আগস্ট ১০, ২০২৩

বর্তমানে মরিচের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল ও সহনীয় হলেও কিছুদিন আগেও মরিচের কেজিপ্রতি দাম উঠেছিলো হাজার টাকা পর্যন্ত। এ যেন ‘ঝালের উপর ঝাল!’ মরিচের এই ‘মূল্যঝাল’ কমানোর ক্ষমতা বা সক্ষমতা তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের নেই।

তবে মরিচের ঝালে কখনো কখনো মুখ যখন প্রায় আগ্নেয়গিরি হয়ে ওঠে, সে সময়ের ঝালের নিয়ন্ত্রণ কিন্তু আমাদের হাতেই! তখন অসহনীয় ঝালের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আমাদেরই নিতে হয় কার্যকরী পদক্ষেপ। ঝাল সংক্রান্ত ঘটনা ঘটলে আমরা তাৎক্ষণিক পানির দিকেই হাত বাড়াই।

তবে আশ্চর্য হলেও সত্য যে, ঝাল কমাতে পানি তেমন কার্যকরী নয় বরং এতে ঝালের যন্ত্রণা বেড়ে যায়। মরিচের মাধ্যমে আমরা যে ঝালের অনুভূতি পাই সেটা ক্যাপসাইসিন নামক রাসায়নিকের কারণে।

আর এটি প্রাকৃতিক তেল হওয়ায় চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী পানি এই তেলের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। উপরন্তু এই প্রাকৃতিক তেলকে পুরো মুখে ছড়িয়ে দেয়, ফলে মুখে আরও জ্বলুনি অনুভূত হয়।

আরো পড়ুন: খালি পেটে যেসব খাবার খেলে শরীর থাকবে সুস্থ

তাই পানির কথা তুলে রেখে ঝাল কমাতে পারে এমন কিছু খাদ্য ও পানীয়ের কথা জেনে নেওয়া যাক। পানীয় দ্রব্যের মাধ্যমে কীভাবে ঝাল নিয়ন্ত্রণ করবেন?

দুধ

প্রচণ্ড ঝালে যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, সে সময় একচুমুক ঠান্ডা দুধ নিমিষেই ঝালের যন্ত্রণা নিঃশেষ করে দিতে পারে। দুধে থাকা ক্যাসেইন নামক প্রোটিন ঝালের ক্যাপসাইসিনকে ভেঙে ফেলে। এর ফলে ক্যাপসাইসিন তার কার্যকারিতা হারায় ও মরিচের জ্বালা দূরীভূত হয়।

অম্লীয় জুস

ঝালে যখন চোখ-মুখ লালিম হয়ে উঠেছে, ঝাল কমাতে সেসময় পান করতে পারেন লেবু বা কমলার জুস। ঝালের রাসায়নিক উপাদানটি লেবু বা কমলার প্রভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, ফলে মুখ থেকে ঝালভাব কেটে যায়।

টমেটো বা আনারসও একই রকম কাজ করে থাকে। ফলগুলোর জুস তৈরি না থাকলে তাৎক্ষণিক সেগুলোর দু’এক টুকরো মুখে দিলেও সুফল পাওয়া যায়।

খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে ঝাল নিয়ন্ত্রণ

মিষ্টান্ন

ঝাল লেগে গেলে অনেক সময় আমরা মুখে কয়েক চামচ চিনি পুরে নেই। এটি ঝালের প্রভাব থেকে মুক্তির একটি ফলপ্রসূ পদক্ষেপ। চিনি ছাড়াও ঝালের ক্যাপসাইসিনকে বশে আনে মধু ও যে কোনো মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য। এক্ষেত্রে মিষ্টি বা টক দই কিংবা দুগ্ধজাত চকলেট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আরো পড়ুন: ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান ধরে কেন?

অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল

ঝালের প্রচণ্ডতায় যখন চোখ-নাক দিয়ে পানি ঝরতে শুরু করেছে, কপাল ঘেমে উঠেছে, এমন সময় হাতের কাছে থাকা অলিভ অয়েলও আপনাকে ঝাল থেকে বাঁচাতে পারে।

নানাবিধ পুষ্টিগুণের পাশাপাশি অলিভ অয়েলে ঝালের প্রভাব বিনষ্ট করার ক্ষমতাও বিদ্যমান। তাই অন্যকিছু না পেলে ঝালের তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে এক চামচ অলিভ অয়েল খেয়ে নিতে পারেন।

স্টার্চ বা শ্বেতসার

ঝালের প্রভাব কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে শ্বেতসার। শ্বেতসার একটি রাসায়নিক উপদান। যা পাওয়া যায় ধান, গম, আলু ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্যে। তাই ঝাল লেগে গেলে খেয়ে নিতে পারেন ফোলা রুটি বা ভাত।

পাস্তা বা মসলা ছাড়া সিদ্ধ আলুও এক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকরী। শ্বেতসার ক্যাপসাইসিন ও মুখের মধ্যে প্রাকৃতিক বাধা তৈরি করে, এছাড়া এসব খাবার ঝালে থাকা ক্যাপসাইসিন শুষেও নিতে পারে, ফলে ঝালের প্রদাহ তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে এসে যায়।

আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করলা কেন উপকারী?

হতে পারে মরিচের উচ্চমূল্যের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই, তবে উপরের কোনো একটি উপায় অবলম্বন করে আমরা মরিচের ঝাল তো নিয়ন্ত্রণ করতেই পারি!

তথ্যসূত্র: উইকিহাউ, এনডিটিভি

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment