অস্টিওআর্থারাইটিস বা গেঁটে বাত এর লক্ষণ! জেনে নিন বিস্তারিত 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • মার্চ ২৬, ২০১৮

হাড়ের জোড়ার বাতকে গেঁটে বাত বলা হয়। বাংলাদেশে গেঁটে বাতে আক্রান্ত হওয়াটা খুবই সাধারনএকটা ঘটনা এবং প্রচুর সংখ্যক মানুষকে এর কারণে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়।

গেঁটে বাতের লক্ষণ : গেঁটে বাতের লক্ষণের মাত্রা ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম হতে পারে এবং কোন ধরনের হাড়ের জোড়া আক্রান্ত হয়েছে তার উপরও নির্ভর করে। যেমন, কোন হাড়ের জোড়া হয়ত মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু দেখা যায় লক্ষণ খুবই কম, আবার কোন হাড়ের জোড়ায় সামান্য ক্ষতিতেই লক্ষণ তীব্র আকারে দেখা দেয়। গেঁটে বাতের লক্ষনীয় বৈশিষ্ট গুলো হলো-

● আক্রান্ত জোড়ার ভিতরে এবং চারপাশের মাংসপেশিতে মৃদু প্রদাহ হয়

● জোড়ার ভিতরে হাড়ের গায়ে যে তরুণাস্থি (cartilage) থাকে তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এই তরুণাস্থি খুবই শক্ত থাকে এবং যার উপরিভাগ মসৃণ ও পিচ্ছিল থাকার কারনে জোড়া সহজে নাড়াচাড়া করতে পারে এবং ঘর্ষণ জনিত ক্ষয় হয় না। 

● জোড়ার ভিতরে হাড়ের পার্শ্বদেশ গুলি কিছুটা উচু ও অমসৃণ হয়ে পড়ে, ফলে জোড়া শক্ত হয়ে যায়, ব্যথা হয়, নাড়াচাড়ায় সমস্যা হয়
গেঁটে বাতে মূলত হাটু, ঊরুসন্ধি (hip joint), মেরুদন্ডের কশেরুকার (spine) জোড়া, হাতের আঙ্গুলের ছোট ছোট জোড়া এবং পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের গোড়া আক্রান্ত হয়। তবে শরীরের যে কোন হাড়ের জোড়ায় গেঁটে বাত হতে পারে।

সাধারণত গেঁটে বাত হয় যাদের সাধারনত পঞ্চাশোর্ধ বয়স্কদের গেঁটে বাত হয়ে থাকে এবং পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি হয়ে থাকে। প্রচলিত ধারনা হল গেঁটে বাত বুড়ো বয়সের অবিচ্ছেদ্য সমস্যা, কিন্তু আসলে তা সত্য নয়। অতি বৃদ্ধদের এক্স-রে তে গেঁটে বাত এর লক্ষণ দেখা গেলেও অনেকেরই সে সম্পর্কিত কোনো হাড়ের জোড়ার সমস্যা বা ব্যাথা থাকে না। অল্প বয়স্ক ব্যাক্তিরাও গেঁটে বাত এ আক্রান্ত হতে পারেন কোনো আঘাত বা হাড়ের জোড়ার সমস্যার কারনে। গেঁটে বাতের ব্যবস্থাপনা গেঁটে বাত কখনো পুরোপুরি ভাল হয় না, তবে ওষুধের মাধ্যমে এর লক্ষন গুলিকে সহনীয় মাত্রায় রাখা যায়। লক্ষণ তেমন তীব্র না হলে ব্যায়াম এবং বিশেষ ধরনের জুতা-মোজা ব্যবহারের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। তবে গেঁটে বাত জটিল আকার ধারন করলে অন্যান্য চিকিৎসারও প্রয়োজন হয়। সম্ভাব্য চিকিৎসা গুলো হলো -

● ওষুধ ছাড়া চিকিৎসা যেমন, ফিজিওথেরাপি এবং ওজন কমানো

● ব্যাথানাশক ওষুধ

● জটিল আকার ধারন করলে অপারেশন যেমন, হাটু বা ঊরূসন্ধি প্রতিস্থাপন (knee or hip replacement)

গেঁটে বাত যেহেতু নিরাময় যোগ্য নয় এবং দীর্ঘমেয়াদি একটি অসুখ, এটার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া শিখতে হয় যেমন, যে ধরনের নড়াচড়া,চলাফেরায় সমস্যা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলা, বিশেষ কিছু ব্যায়াম নিয়মিত ভাবে করা ইত্যাদি। দক্ষ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে তা জেনে নেয়া উচিত। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীর সেবার পাশাপাশি রোগিকেও অনেক কিছু করতে হয়, যেমন নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা। সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের সাথে নিয়মিত আলাপ আলোচনা করতে পারলে বা আক্রান্ত অন্যান্য মানুষের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ থাকলে গেঁটে বাত আক্রান্ত রোগীরা অনেক সময় উপকৃত হন।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment