কিভাবে প্রাকৃতিক ফ্যামিলি প্ল্যানিং করতে হয় জেনে নিন 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • নভেম্বর ১৩, ২০১৭

ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফ্যামিলি প্ল্যানিং করা বেশ সুবিধাজনক। তিনভাবে ন্যাচারাল ফ্যামিলি প্ল্যানিং করা যায়। তার মধ্যে সেফ পিরিয়ড গণনা করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কাপলের জন্য বেশ আকর্ষণীয় । এ পদ্ধতি পিরিয়ডের নিরাপদ সময় গণনা করে হয়ে থাকে। 

সাধারণত পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগের নয়দিন, পিরিয়ডের  দিনগুলো এবং পিরিয়ড পরবর্তী চারদিন নিরাপদ সময়ের অন্তর্গত। এ সময়ে দৈহিক মিলন হলেও গর্ভপাত সঞ্চারণের কোনো ঝুঁকি থাকে না। উল্লেখ্য, পিরিয়ডের সময় দৈহিক মিলন ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাছাড়া বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও এটা গ্রহণযোগ্য নয়। 

সে কারণে পিরিয়ড শুরুর আগের নয়দিন এবং পিরিয়ড পরবর্তী চারদিনেই সেফ পিরিয়ড বা নিরাপদ সময় হিসেবে গণ্য করতে হবে। অঙ্কের হিসেবেও নিরাপদ সময় বের করা যায়। ধরুন ২৮ দিন পরপর আপনার নিয়মিত মাসিক হয়। ২৮ থেকে প্রথমে ১৮ এবং পরে ১০ বাদ দিন (২৮-১৮=১০ এবং ২৮-১০=১৮)। অর্থাৎ পিরিয়ড শুরু হওয়ার দিন থেকে নবম দিন পর্যন্ত আপনি নিরাপদ, দশম দিন থেকে ১৮তম দিন পর্যন্ত আপনি ঝুঁকিপূর্ণ এবং আবার ১৯তম দিন থেকে ২৮তম দিন পর্যন্ত আপনি নিরাপদ। অনেকের অনিয়মিত পিরিয়ড হয়। ধরুন কোনো মাসে ৪৫ দিন পর এবং অন্য মাসে ২৬ দিন পর হয়। সে ক্ষেত্রে ৪৫ থেকে ১০ বাদ দিন (৪৫-১০=৩৫) এবং ২৬ থেকে ১৮ বাদ দিন (২৬-১৮=৮) অর্থাৎ পিরিয়ড চক্রের অষ্টম দিন থেকে ৩৫তম দিন পর্যন্ত আপনি ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন। বাকি সময় মোটামুটি নিরাপদ।

ন্যাচারাল ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে মহিলাদের দৈহিক তাপমাত্রা মেপে নিরাপদ সময় বের করা। এ ক্ষেত্রে ভোরবেলা বিছানা ত্যাগের আগ মুহূর্তে মহিলাদের দৈহিক তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। পিরিয়ড চক্রের প্রথমার্ধে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। পরে আস্তে আস্তে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ০.২ থেকে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। ডিম্বাণু পরিস্ফুটনের সময় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পায়। এ সময়টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধির তিনদিন পর আবার দৈহিক মিলন শুরু করতে পারেন।

ন্যাচারাল ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের সর্বশেষ পদ্ধতি হচ্ছে জরায়ু মুখের মিউকাস পরীক্ষা করে ঝুঁকিপূর্ণ সময় বের করা। এ পদ্ধতিতে একজন মহিলা আঙুলের সাহায্যে তার জরায়ু মুখের মিউকাস বা নিঃসৃত রস পরীক্ষা করবে। ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে মিউকাসের পরিমাণ ও ঘনত্ব বাড়তে থাকে। সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর পর আস্তে আস্তে মিউকাসের পরিমাণ ও ঘনত্ব কমে যায়। প্রজেস্টেরন হরমোনের প্রভাব এমনটা হয়ে থাকে এবং পিরিয়ড শুরু না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করে। মিউকাসের ঘনত্ব ও পরিমাণ সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর চারদিন পর থেকে দৈহিক সম্পর্ক শুরু করা যেতে পারে।

ন্যাচারাল ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের উপকারিতা :

এ পদ্ধতিতে হরমোন ট্যাবলেট বা কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে হয় না। কোনো কোনো ধর্মে এ জাতীয় জিনিস ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। তাই তাদের ক্ষেত্রে ন্যাচারাল ফ্যামিলি প্ল্যানিংই একমাত্র পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তাছাড়া যারা সন্তান নিতে চান তাদেরও নিরাপদ সময় ও ঝুঁকিপূর্ণ সময় সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কেননা একমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ সময়ের দৈহিক সম্পর্ক আপনাকে পিতৃত্ব কিংবা মাতৃত্বের স্বাদ এনে দিতে পারে।

ন্যাচারালফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের অসুবিধাঃ

প্রায় ২৫ ভাগ ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যর্থ। যাদের অনিয়মিত পিরিয়ড হয় তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না।
এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হলে শিক্ষিত দম্পতি, কখনো কখনো ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধে অক্ষম।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment