জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল এ বাড়তে পারে বিষণ্নতা

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • আগস্ট ১১, ২০১৮

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল অন্যান্য জন্মনিরোধক এর চেয়ে নিরাপদ এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় যেসব মহিলারা নিয়মিত সাধারণ ধরণের কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল ব্যবহার করেন তাদের থেকে বেশ কিছু প্রমাণ দেখিয়েছেন—এসব পিলগুলোতে দুটো হরমোন থাকে হরমোন থাকে (এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন), দেখা গেছে পিল অব্যবহারকারীদের চেয়ে ২৩ শতাংশ ব্যবহারকারীদের এন্টিডিপ্রেসান্ট ড্রাগ নেওয়ার প্রয়োজন হয়।

গর্ভনিরোধক সায়মিকভাবে অস্থিতীশিলভাবে ঝুকি ১০০ শতাংশ। এর মধ্যে ভ্যাজাইনাল রিং ঝুকি হচ্ছে ৬০ শতাংশের। IUS (Intrauterine System)এর ব্যবহারে ঝুকি বেড়েছে ৪০ শতাংশ। কিশোরীরা সবচেয়ে বেশী ঝুকির দলে ছিল যাদের বয়স ১৫ থেকে ১৯। তাদের ঝুকি ৮০ শতাংশের বেশী এবং তাদের এন্টিডিপ্রেসেন্ট প্রয়োজন হয়।

গবেষণাটি ছিল বেশ বড় ধরণের, ১ মিলিয়নেরও বেশী ড্যানিশ মহিলাদের যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩৪ বছর তাদের সমন্বয়ে ১৩ বছরের বেশী সময় ধরে তাদের স্বাস্থ্য রেকর্ড ট্রেস করা হয়। এদের থেকে শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভালভাবেই জানা গেছে কিন্তু এই গবেষণাটি বিস্তারিতভাবে এই প্রথম যেটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং সম্ভাব্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ের সাথে যুক্ত করে করা হয়েছে।

পরিষ্কারভাবে বলে হয়েছে এই গবেষণাই শেষ নয় যে পিল জন্মনিয়ন্ত্রণের ভাল কিছু নয়। এটা ৯৯ শতাংশেরও বেশী ফলপ্রসূ যদি সঠিকভাবে গ্রহণ করা হয় এবং সম্ভবত অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলোর সাথে সম্পর্ক এন্টিডিপ্রেসেন্টে কিছুটা বেশী থাকতে পারে, যেমন গর্ভাব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ।

এতকিছুর পরও এই গবেষণাটি উল্লেখ্যযোগ্য, গার্ডিয়ান এর প্রতিবেদন হিসেবে বয়ঃসন্ধির পর পুরুষের তুলনায় মহিলারা দিগুণ বিষন্নতায় ভোগে। দুই মহিলার সেক্স হরমোন (এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন)তারতম্যের মাত্রা একত্র করা হয়েছে, এই দুটির একত্রে পিল ব্যবহারের প্রভাব পড়েছে। বলা যায় উভয়েই উচ্চমাত্রায় গ্রহণ করলে ব্যবহারকারীদের মেজাজ নিম্নমাত্রায় আসতে পারে।

এসব মেডিকেশনে জনগণকে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো জানিয়ে দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে বিষন্নতাকে কোনক্রমেই উপেক্ষা করে নয়। কারন বিষন্নতা আসলেই মারাত্মক ব্যধি এটা আমাদের দেশের লোকজন প্রায়শই উপেক্ষা করে। মাঝে মাঝে ডাক্তারেরাও এই বিষয়টা উপেক্ষা করে আর সাধারণ মানুষতো বোঝার ক্ষমতা এই বিষয়ে নাই বললেও চলে।

সারাবিশ্বে ৩৫০ মিলিয়নেরও বেশী মানুষ বিষন্নতায় ভোগে এবং এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশই নিজেকে শেষ করে দেয় বা নিজের মারাত্মক ক্ষতি করে বসে যদি তাদের চিকিৎসা না করানো হয়। যদিও কখনো কখনো দেখা গেছে মানসিক ব্যধি প্রায় পারিপার্শিক কারণেই ঘটে থাকে, অনেক গবেষণা তত্ত্বে বিশ্বাস করা হয় যে জৈবিক উত্তরাধিকার সূত্রে জেনেটিকসের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে।

এর উপসর্গের পরিসীমা টানা জটিল বটে। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেসন একটা অসুখ। এটা শরীরের অন্যান্য অসুখের মতোই অসুখ। দুর্ভাগ্যবশত মহিলাদের গর্ভনিরোধক এই অসুখের ঝুকির বাড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যান্য কিছুর চেয়ে এই গবেষণায় জোড় দেওয়া হয়েছে সম্ভাব্য রোগীদের যখন ব্যবস্থাপত্র বা প্রেক্রাইব করা হয় যেন তাদের বিষন্নতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো হয়। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জোড় দেওয়া হয়েছে যে এটা পুরুষের তুলনায় মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণের বোঝা অনেক বেশী এবং এ অনায্য ভারসাম্যহীনতা থেকে মুক্তি পেতে অনেক অনেক কাজ করা প্রয়োজন।

আর/এস

 

Leave a Comment