কত কুৎসিত মন মানসিকতা আপনাদের!

  • ফারজানা আক্তার 
  • মার্চ ১৯, ২০১৯

আচ্ছা এই দেশে কি একবার ডিভোর্স হয়ে গেলে আর বিয়ে করা যাবে না এই মর্মে কোন আইন আছে? ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর একজন মেয়েকে কেন খারাপ মেয়ে তকমা দেয় এই সমাজ? এই মেয়েকে কেন এতো নোংরা কথা শুনতে হয়? সমাজের মানুষ একজন ডিভোর্সি মেয়ের কোন কিছুকে কেন স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না?

আমার প্রশ্ন হলো কেন? এবং কেন?

মিথিলা জন কবিরকে বিয়ে করবে, নাকি সৃজিতকে বিয়ে করবে সেটার সিদ্ধান্ত মিথিলা নিবে। মিথিলার পরিবার আছে তারা নিবে। জন কবির কালো আর সৃজিতের বয়স বেশি, তবুও মিথিলা কেন তাদের পছন্দ করলো! মিথিলা এই! মিথিলা সেই! মিথিলার জীবন নিয়ে আমজনতার কেন এতো মাথা ব্যথা? প্রথম আলো, জাগোনিউজে মিথিলা আর সৃজিতকে নিয়ে করা নিউজের পোস্টের কমেন্ট পড়লে যেকোন সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবে।

একজন মেয়েকে নিয়ে কত ধরণের রসালো কথাবার্তা বলা যায়, কত ধরনের গালিগালাজ করা যায় এই ফেসবুক না থাকলে জানা হতো না। মানুষ সারাক্ষণ উন্নয়নের আর এগিয়ে চলার চিৎকার চেঁচামেচি করছে কিন্তু নিজের মন মানসিকতার দিকে নজর নিচ্ছে না। হায়রে! মানসিকতার উন্নয়ন না হলে সভ্যতার উন্নয়ন দিয়ে কি হবে?কোন ছেলে মেয়ে চায় না তাদের সংসার বা সম্পর্ক ভেঙ্গে যাক। যে সম্পর্ক বা সংসার ভাঙ্গে সেগুলো হুট্ করে ভাঙ্গে না। অনেক চেষ্টা প্রচেষ্টা, চিন্তা- ভাবনার পরেও যখন টিকানো যায় না তখন ভাঙ্গে।

সংসার ভাঙ্গলেও মেয়েকেই গালি শুনতে হবে, খারাপ মেয়ের তকমাটা তার কপালেই লাগে। ডিভোর্সের পর আবার বিয়ে করতে চাইলে সেখানেও খারাপ তকমাটা মেয়ের কপালেই লাগে। আপনাদের কি মনে হয় মিথিলার এখন সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়ার দরকার? একবার ডিভোর্স হয়েছে এখন বিয়ে না করে পাহাড়ে যেয়ে ধ্যানে বসা দরকার?তাছাড়া মিথিলা তো এখনো বিয়ের ঘোষণা দেয় নি। মিডিয়া আন্দাজের উপর একটা খবর ছাপালো আর আপনারা তাকে পর্ন নায়িকা পর্যন্ত বানিয়ে দিলেন? কত গভীর চিন্তা ভাবনা আপনাদের! কত ফ্রি সময় আপনাদের! কত কুৎসিত মন মানসিকতা আপনাদের!

মিথিলা কি করবে! কাকে বিয়ে করবে! তাহসান কষ্টে ছিলো নাকি সুখে ছিলো! তাহসান মিথিলার ডিভোর্সের জন্য কে দ্বায়ী সেসব না ভেবে নিজের দিকে তাকান।নিজের পরিবারের দিকে নজর দিন। অন্য একটি মেয়েকে বিছানায় নেওয়ার চিন্তা করার আগে, কিভাবে একটি মেয়ের চলার পথ সহজ করে দেওয়া যায় সেটি ভাবুন। দুনিয়াতে আজ আছেন, কাল নেই। বেঁচে থাকাটা এক মিনিটের জন্য হলেও কিভাবে সার্থক করা যায় সেটি করুন। নিজের মন পরিষ্কার রাখুন, অন্যকে মানসিক অশান্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

 

 

 

Leave a Comment