অনেক বছর বাঁচতে চাচ্ছেন? মাইকেলের গল্পটা জানেন?

  • ফারজানা আক্তার 
  • মে ২১, ২০২০

মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, গান লেখক,অভিনেতা, সমাজসেবক এবং ব্যবসায়ী মাইকেল জ্যাকসন ১৫০ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন।

তিনি কারো সাথে হ্যান্ডশেক করার সময় হাতে দস্তানা পরতেন, তার মুখে সবসময় মাস্ক থাকতো। তার নিজের দেখাশোনা করার জন্য তার বাসায় সবসময় অভিজ্ঞ ১২জন ডাক্তার থাকতো।

এই ডাক্তারদের কাজ ছিলো প্রতিদিন তার মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। তার প্রতিবেলার খাবার ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করে নিয়ে আসা হতো। তিনি প্রতিদিন ব্যায়াম করতেন। ব্যায়ামে তাকে হেল্প করার জন্য ১৫জন লোক নিযুক্ত ছিলো।

তিনি ঘুমাতেন অক্সিজেনযুক্ত বিছানায়। তার নিজের জন্য অর্গান ডোনারও রেডি করে রেখেছিলেন। ডোনারদের সকল খরচ তিনি বহন করতেন। যদি হুট করে তার কিডনি, চোখ, ফুসফুসের দরকার হয় ডোনাররা যেন সাথে সাথে দিতে পারে।

এই যে ১৫০বছর বেঁচে থাকার জন্য তিনি এতো এতো আয়োজন করেছেন তবুও কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। মাত্র ৫০বছর বয়সে নিয়তির কাছে হেরে গিয়েছিলেন।

২০০৯ সালের ২৫শে জুন মাইকেলের মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র তার নিজের জন্য নিযুক্ত থাকা ১২জন ডাক্তার কিছুই করতে পারেন নি। বেঁচে থাকার তার বড় সাধ ছিলো। জীবনের শেষ ২৫বছর তিনি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এক পা'ও নড়তেন না।

মৃত্যু আমাদের সকলের জীবনের ভয়ংকর সত্য। মৃত্যুকে আমরা সবাই ভয় পাই কিন্তু তবুও ঠিক সময়ে আমাদের একে আলিঙ্গন করতে হবে।

মৃত্যু থেকে পালানোর কোন রাস্তা আমাদের নেই।

এই যে আমাদের বেঁচে থাকার শত শত আয়োজন! এই আয়োজন কি আমাদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারবে? এই যে অল্পদিনের সফরে আমরা লুটপাট করে নিজে সম্পদের পাহাড় গড়ি সেই পাহাড় আমাদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারবে? এই যে আমরা মিথ্যা অহংকার, মোহ নিজে মজে থাকি সেই মিথ্যা অহংকার, মোহ আমাদের বাঁচাতে পারবে?

মাইকেল ছিলেন এমন এক ব্যক্তি যার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন তৈরী হয়। তার মৃত্যুর ফলে পৃথিবীর ইন্টারনেট ব্যবস্থা এক প্রকার ভেঙে পড়ে।

তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পৃথিবীর সকল অঞ্চল থেকে তার ভক্ত ও সাধারণ মানুষ গুগলে সার্চ করা শুরু করে। "Michael Jackson" শব্দটি এত বেশি(মিলিয়ন মিলিয়ন) ইনপুট হবার কারণে তারা ভেবেই বসে DDoS Virus এ তাদের সার্চ ইঞ্জিন আক্রান্ত হয়েছে যার ফলে তারা প্রায় ৩০ মিনিট গুগল বন্ধ রাখে। ( সূত্র : উইকিপিডিয়া )

উইকিপিডিয়াতে ১ ঘণ্টার মধ্যে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ মাইকেলের বায়োগ্রাফি দেখে, আর এই চাপ উইকিপিডিয়া লোড নিতে সক্ষম না হওয়াতে Crash করে(পরে কর্তৃপক্ষ জানায় তাদের ইতিহাসে এরকম ঘটনা এই প্রথম), একিরকম ভাবে টুইটার-ও Crash হয়,যেখানে মোট টুইটের ১৫ % মেনশন করা হচ্ছিল মাইকেল (প্রতি মিনিটে ৫০০০+ টুইট)। ( সূত্র : উইকিপিডিয়া )

এছাড়াও বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে,ইন্টারনেটে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারন ইন্টারনেট ট্রাফিকের ১১% হতে তা ২০% এ উন্নিত হয়। এমটিভি ২৪ ঘণ্টা ধরে তার মিউজিক ভিডিও, ডকুমেন্টারি, ভক্ত, ফ্যামিলি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। ( সূত্র : উইকিপিডিয়া )

তার শেষ কৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠান পৃথিবীর ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি টেলিভিশন ও অনলাইনে দেখে,যা এই পর্যন্ত সর্বোচ্চ কারো কৃত্যানুষ্ঠান দেখা হয়েছে। ( সূত্র : উইকিপিডিয়া )

Leave a Comment