ঘরবন্দী হয়ে শিশু রুটিন মাফিক পড়াশুনা করছেনা ? জানুন সমাধান

  • তাসফিয়া আমিন
  • মে ২৯, ২০২০

লকডাউনের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ। বাইরে খেলাধুলা বা বন্ধুদের সাথে দেখাও নেই। বাসায় বাবা-মা পড়ার চাপ দিচ্ছে। তাই চাইলেও শিশুরা নিজেদের মনের মতো সময় কাটাতে পারছে না।

সবসময় বাবা-মায়ের চোখের সামনে থাকতে হচ্ছে বাচ্চাদের। বাবা-মায়ের নির্দেশে সময়মতো ঘুম, খাওয়া- দাওয়া, করতে। বেশিক্ষণ টিভি দেখা কিংবা খেলাধুলাও হচ্ছে না শিশুদের। চাইলেও বাইরের খাবার খেতে পারছে না। সব মিলিয়ে শিশুদের ওপর বেশ মানসিক চাপ পড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অস্থিরতাও। বিভিন্ন আচরণের মাধ্যমে তাদের এই অস্থিরতা প্রকাশ পাচ্ছে। এতে বাবা-মায়ের ওপরও চাপ পড়ছে। অনেকে অস্থিরতা কমাতে বাচ্চাদের মারধর করছেন।

কিন্তু জানেন কি? শিশুদের শান্ত রাখতে প্রথমে প্রয়োজন নিজের ব্যবহার পরিবর্তন করা। সেই সঙ্গে আরও কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন। বিস্তারিত জেনে নিনঃ

১. বাসায় যা করবেন, তার বেশ কিছুটা সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করে করুন। সে কি খেতে চায় জিজ্ঞেস করুন। শুধু রান্না নয়, আপনার বাচ্চার যেকোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাকে জানান। তার মতামত অগ্রাহ্য করে সবসময় নিজের মত চাপালে হিতে বিপরীত হতে পারে।

২. আপনার শিশুর সঙ্গে কথা বলে একটা রুটিন ঠিক করুন। কতক্ষণ সে পড়বে, টিভি দেখবে, গেম খেলবে আর আপনার কাজে সাহায্য করবে এটা তার সঙ্গে আলোচনা করুন। একই ভাবে তার ঘুমাতে যাওয়া, সকালে ওঠা, হালকা ব্যায়াম ও কোনও শখের চর্চা কখন কতক্ষণ ধরে করবে সে, তারও একটা কাঠামো ঠিক করে নিন। রুটিন না মানলে তার সঙ্গে আবার আলোচনা করুন। এতে অশান্তি কমবে, সে নিজের দায়িত্বও নিতে শিখবে। সব সময় শিশুদের বকাবকি বা মারধর করা ঠিক নয়।

৩. সবসময় সন্তানের ভালো কাজের প্রশংসা করুন। নিয়ম মানলে তাকে আনন্দ দেয় এমন কিছু উপহার দিন বা পছন্দের খাবার বানিয়ে খাওয়ান। তার ভিডিও গেম বা টিভি দেখার সময় আধ ঘন্টা বাড়িয়ে দিন। এতে বাচ্চা ভালো কাজ করার আরও উৎসাহিত হবে।

৪. রুটিনের ব্যাপারে সন্তান হয়তো প্রথমে রাজি হবে তারপর তার উৎসাহ কমে যেতে পারে। তাই ধৈর্য ধরুন। বকাঝকা না করে নিয়মিত তাকে বিষয়গুলি মনে করিয়ে দিন। এতে তার মধ্যে আস্তে আস্তে একটা পরিবর্তন আসবে।

৫. শিশুর কোনও বিশেষ চাহিদা থাকলে আগেই না করবেন না। বরং তার কথা শুনুন। তার ক্ষতি না হলে চাহিদা অনুযায়ী তা পূরণের চেষ্টা করুন। তার ক্ষতি হয় এমন কিছু হলে তাকে বুঝিয়ে বলুন। বকাঝকা সব কিছুর সমাধান নয়।

৬. কখনও অন্যের সন্তানের সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করবেন না। তারই কোনও বন্ধু বা প্রতিবেশী শিশু কত ভালো করে পড়ছে, বা কাজ করছে এগুলো বলে তার মন ছোট করবেন না। এতে লাভ না হয়ে বরং শিশুর ক্ষতিই হবে।

Leave a Comment