আপনার ওজন কমছে, কিন্ত পেট বা কোমরের পরিধির পরিমাপ ঠিক আছে তো ?

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • অক্টোবর ২১, ২০১৭

সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০বছরের পর শুধু ওজন ঠিক রাখলেই হবে না।  ওজনের গতিবিধি লক্ষ্য রেখে পেট বা কোমরের পরিধির পরিমাপও ঠিক রাখতে হবে।  এই পরিমাপ আপনাদের সঠিক ওজনের পাশাপাশি জানিয়ে দিবে আপনার বডি টোনিং বা বডি শেইপের খবর এবং আপনার ফিটনেস।

আপনার ‘বডি শেইপ’ কোন গড়নের ? 

আরো পড়ুনঃ কাঁকরোল ভর্তা

মেয়েদের শরীরকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যাদের শরীরের মেদ  তলপেট বা পেটের চারদিক ঘিরে, তাদের শরীরের গঠনকে ‘অ্যাপেল শেইপ’ এবং যাদের শরীরের মেদ কোমরের নিচ থেকে হাঁটুর ওপর পর্যন্ত অংশ জুড়ে জমে তাদেরকে ‘পিয়ার্স শেইপ’ বা ‘নাশপাতি শেইপ’ বলা হয়।

মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তন সাধারণত হরমোনজনিত। নিজের শরীর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে ‘বডি শেইপ’-এর ধরণ বুঝে নেয়াটা জরুরি।  কারণ , শরীরের ধরণ বুঝলে আপনি জেনে নিতে পারবেন আপনার পেট বা কোমর কোন অংশের ব্যায়ামে আপনাকে মনোযোগী হতে হবে।

পেটের পরিধির মাপ :

সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের পরিধি পরিমাপ করা খুব ইম্পরট্যান্ট। পেটের পরিমাপ থেকেই আপনি কিছু রোগ যেমন : টাইপ টু ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ ইত্যাদির ঝুঁকি আছে কিনা আন্দাজ করতে পারবেন।

২৫ বছর বয়সের পর থেকে এশিয়ার নারীদের পেটের পরিধি নিয়মিত পরিমাপ করা জুরুরি। কোমরের উঁচু হাড় আর পাঁজরের শেষ হাড়ের মাঝামাঝি অংশে ফিতা রেখে কোমরের পরিধি মাপুন। লক্ষ্য রাখুন এই মাপ ৮০সেন্টিমিটার ছাড়িয়ে গেছে কিনা। কোমরের মাপ ৮০সেন্টিমিটারের বেশি হলে বিভিন্ন ধরনের অসুখের শঙ্কা বাড়তে থাকে।

আরো একটি সহজ পরিমাপ আছে।  আপনার উচ্চতার অর্ধেকের নিচে রাখতে হবে কোমরের পরিধিকে। আপনার উচ্চতা যদি ৫ফুট হয় অথাৎ ৬০ইঞ্চি।  সে ক্ষেত্রে আপনার কোমরের পরিধি রাখতে হবে ৩০ইঞ্চির নিচে।

আরও কয়েকটি পরিমাপ :

আপনি যদি নিজের শরীর নিয়ে একটু বেশি সচেতন হোন , তাহলে আপনার জন্য আরো দুইটি পদ্ধতি রয়েছে পরিমাপ জানার। একটি হলো ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ বা বিএমআই এবং অন্যটি  কোমর ও নিতম্বের অনুপাত। 

আরো পড়ুনঃ ইলিশের ঝোল রান্না

সাধারণত চিকিৎসক, পুষ্টিবিদ অথবা ডায়েটেশিয়ানরা বিএমআই মেপে মানুষের পুষ্টির অবস্থা নির্ণয় করে থাকেন। সাধারণ মানুষের জন্য বিএমআই পরিমাপ করাটা জটিল। বিএমআই জানার জন্য চিকিৎসক বা ডায়েটেশিয়ানের কাছে যাওয়ায় ভালো।

অন্য দিকে কোমর ও নিতম্বের অনুপাত ঘরে বসে পরিমাপ করা অনেক সহজ।

কোমরের পরিধিকে নিতম্বের পরিধি দিয়ে ভাগ করলে তা যদি .৮৭ এর বেশি হয়, তাহলে বুঝে নিবেন আপনি ওজনাধিক্যের শিকার হয়েছেন। আপনি ঝুঁকিতে আছেন। আপনার নিয়মিত ব্যায়াম ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা জরুরি।

কোমরের পরিধি মাপা কেন জরুরি :

কোমরের মাপ ৮০সেন্টিমিটারের বেশি হলে আপনার বডি যেমন নষ্ট হয়, তেমনি আপনার ফিটনেসও গুরুতরভাবে আহত হয়। কোমরের মাপ ৮০ সেন্টিমিটারের ওপরে যাওয়া মানেই হূদ্‌রোগ বা টাইপ টু ডায়াবেটিসকে হাতছানি দিয়ে আপনি ডাকছেন ।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বেশিরভাগ নারীর কোমরের মাপ ৮০ সেন্টিমিটারের ওপরে। তলপেটের চর্বি শরীরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।

কোমরের মেদ নিয়ন্ত্রণে করণীয় :

বাঙালির খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে আমরা নিজেরা নিজেদের অজান্তেই বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করে ফেলি। আমাদের প্রধান খাদ্য ভ্যাট এবং তেল -মসলার রান্না।  ফলে, খুব সহজেই আমাদের কোমরের চারপাশে ও তলপেটে মেদ জমে যায়। কায়িক পরিশ্রমের অভাবেও আমাদের শরীরে মেদ বাড়ে। কোমরের পরিধি ৮০সেন্টিমিটার এবং বয়স ২৫বছরের বেশি হলে সপ্তাহে ৫দিন ৪৫ মিনিট করে হাঁটুন। পাশাপাশি খাবারের তালিকায় শর্করা ও তেলের পরিমান কমিয়ে আঁশযুক্ত খাবার যেমন ফলমূল, শাকসবজি বাড়িয়ে দিন। 

আরো পড়ুনঃ ইলিশ মাছের দোপেয়াজা

আপনার শরীরের গড়ন আপেল নাকি নাশপাতি আকারের, সেটি বুঝে সে ধরণের ব্যায়াম করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment