দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির সহজ পথ

  • কামরুন নাহার স্মৃতি
  • মে ২৩, ২০১৯

টেনশন বা দুশ্চিন্তা নেই এমন মানুষ খুব কম দেখা যায়, এটি জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। টেনশন ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া আজকাল কঠিন ব্যাপার। বিভিন্ন গবেষণার ফলে জানা গেছে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হৃৎযন্ত্রের ক্ষতি করে৷ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে বেশকিছু নিয়ম মানতে হবে।

১. যখনি কোন সমস্যায় পড়বেন এক মিনিট লম্বা শ্বাস নিন আর ভেবে দেখেন কেন চিন্তা করছেন। শতচিন্তার মাঝেও নিজেকে এই বলে স্বান্তনা দিন, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। ভাবুন যে আপনার চেয়ে বেশি সমস্যাগ্রস্থ মানুষ আছে, তারা যদি জীবন নির্বাহ করতে পারে আপনি নয় কেন। সব সময় মনে রাখবেন- আপনি টেনশন নেবেন না, টেনশন আপনার জন্য নয়। দেখবেন আপনি দুশ্চিন্তা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেয়ে গেছেন। সমস্যা একটা আপেক্ষিক ব্যাপার,যা কোন না কোন ভাবে সমাধান হয়ে যায় তাই এ নিয়ে অযথা ভেবে সুন্দর জীবন নষ্ট করবেন না।

২. দুশ্চিন্তা দূর করতে মেডিটেশন বা ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মেডিটেশন বা ব্যায়ামের ফলে আপনি সহজেই আপনার দুশ্চিন্তাকে জয় করতে পারবেন।

৩. নিজেকে সবসময় কাজে ব্যস্ত রাখুন। বলা হয়ে থাকে, “অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।” এটি কিন্তু বাস্তবিকই সত্য। আপনি কোনো কাজ না করে অলসভাবে শুয়ে বসে থাকলে হতাশা আর দুশ্চিন্তা আপনাকে ঘিরে ধরবে- এটাই স্বাভাবিক। তাই যে কোনো উৎপাদনমূলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।

৪. সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন সবাই দেখে কিন্তু তাই বলে ভবিষ্যতের ভাবনায় দুশ্চিন্তা কিংবা হতাশায় ভোগা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। স্বপ্ন পূরণ করতে হলে দুশ্চিন্তা, হতাশা জয় করে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখবেন, আপনি পারবেন, পারবেনই।

৫. যারা সবসময় শুদ্ধ চরিত্রের অধিকারী হতে চান তারাই মূলত হৃদরোগে বেশি ভোগেন। সাধারনত যারা আমি সর্বোত্তম ভাবার চেষ্টা করেন তারা বেশি দুঃশ্চিন্তায় ভোগেন। তারা নিজেকে সবার থেকে উপরে ভাবেন। আর তা না সফল হলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেন। এ ধরনের অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে মনোভাব শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিচরিত্রে শত্রুতার মনোভাব তৈরি করে। এই ধরনের চরিত্রের পেছনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে।

৬. মাদকে ক্যাফেইন থাকে আর অতিরিক্ত ক্যাফেইন খুব দ্রুত আপনার ইন্দ্রিয়কে সজাগ করে তুলে এবং মানসিক চাপ বর্ধক হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এটা তখনই ভালো যদি আপনি কোনও হিংস্র বাঘের মুখে পড়েন। তাই ঘন ঘন চা-কফি, সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ুন।

৭. ঠোঁটের কোণে সবসময় এক চিলতে হাসি রাখুন কিংবা পারলে মন খুলে হাসুন।

৮. বেশিরভাগ মানুষই না ঘুমিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে থাকে, এজন্য বেড়ে যায় দুশ্চিন্তা। যখন কাজে মন বসাতে পারবেন না কিংবা কিছুই ঠিকঠাক করতে পারছেন না তখন নিরিবিলি জায়গায় একটু ঘুমিয়ে নিন। মনের উপর চাপ কমবে।

৯. আপনার হয়তো কখনোই লেখার অভ্যাস নেই কিন্তু আপনি যথাসম্ভব ডায়েরি লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আপনার সমস্যা, দুশ্চিন্তার কারণ সবটা ডায়েরিতে লিখে রাখুন। এতে মনের উপর চাপ কমে এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

টি/আ

 

Leave a Comment