বিয়ে করে জীবনে পূর্নতার স্বাদ পেলাম

  • ফারজানা আক্তার
  • অক্টোবর ৫, ২০২১

তানভীর মেহেদী একজন জাহাজী। তবে তার ফেসবুকে প্রোফাইলে দেওয়া এন্টারটেইনার৷ কারণ ফেসবুকে তিনি মজার পোস্টই বেশি দিয়ে থাকেন। তিনি কিন্তু একজন লেখকও। তার লেখা বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় বই রয়েছে। আজ তার সাথে কথা বলবো সমুদ্রের জীবন, জাহাজের জীবন, সোস্যাল মিডিয়ার জীবন এবং সাহিত্যক জীবন নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারজানা আক্তার।

আরো পড়ুনঃ পেটের ভুঁড়ি দ্রুত কমানো সম্ভব ? 

প্রশ্নঃ সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। নতুন জীবনের অভিজ্ঞতা কেমন?

তানভীর মেহেদীঃ আলহামদুলিল্লাহ্‌। একটা পূর্ণতার মত অভিজ্ঞতা।

প্রশ্নঃ নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা। তা পাত্রের ডেজিগনেশনে কী দিয়েছিলেন? এন্টারটেইনার, জাহাজী, নাকি লেখক?

তানভীর মেহেদীঃ প্রেমিক।

প্রশ্নঃ সমুদ্রের জীবন নিয়ে কিছু বলুন। কেমন যায় সমুদ্রের দিনগুলো?

তানভীর মেহেদীঃ সমুদ্রের জীবনকে আমরা একটা আলাদা লাইফস্টাইল বলি। সেখানের জীবন আলাদা। আমাদের নাগরিক জীবনের সাথে সে জীবনের কোন মিল নেই। আমরা অদ্ভুত সুন্দর একটা জীবন কাটাই। পৃথিবীর প্রায় সবগুলো সমুদ্রে ঘুরে বেড়াই। কতশত দেশ দেখি। কাজের ফাঁকে প্রিয় মানুষদের কথা মনে করি। একটা দীর্ঘশ্বাস তবুও থাকে। সেটা অন্যরকম গল্প।

প্রশ্নঃ গভীর সমুদ্রের সাথে কোন বন্ধন তৈরি হয়েছে? হয়ে থাকলে সেটা কেমন?

তানভীর মেহেদীঃ বন্ধনটা গভীর কিংবা অগভীর সব সমুদ্রের সাথেই প্রায় এক। সমুদ্রে থাকার সময়ে এটা ফিল করা যায় না। দেশে আসার পর বোঝা যায়। সমুদ্রে ফেরার টান অনুভব হয়। আমরা ব্যাপারটাকে সমুদ্রের টানও বলতে পারি।

প্রশ্নঃ সমুদ্রের মাঝে কখনো একাকিত্ব অনুভব করেন? সেটার তীব্রতা কেমন?

তানভীর মেহেদীঃ অত বড় সমুদ্রের সামনে জাহাজটাই তো একা। আমরা আরও ক্ষুদ্র। আরও একা। একদম প্রায় একা একাই কাটানো জীবন। ভীষণ তীব্র একাকীত্ব।

আরো পড়ুনঃ হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গেলে খুব দ্রুত যা খাবেন

প্রশ্নঃ জাহাজী জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলুন।

তানভীর মেহেদীঃ এই লাইফস্টাইলে তিক্ত অভিজ্ঞতা বলে কিছু নেই। একদম টাইম মাপা জীবন। কতটা তিক্ত হতে পারে সেটা মেনে নিয়েই আমরা এই জীবন শুরু করি।

প্রশ্নঃ জাহাজী জীবনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলুন।

তানভীর মেহেদীঃ জাহাজ চলছে, এমন সময় হুট করে সমুদ্রের দিকে তাকালে প্রায়ই দেখা যায় একটা ডলফিনের দল আমাদের সাথে যাচ্ছে। জাহাজে সাথে পাল্লা দিয়ে ডুব দিচ্ছে- ভেসে উঠছে। প্রথম যেদিন দেখলাম, বেশ ছোট ছিলাম। শরীরে কেমন প্রবল ভালো লাগার মত কাঁটা দিয়ে উঠেছিলো।

প্রশ্নঃ এবার সোস্যাল মিডিয়ায় আসি। বর্তমানে সমস্যা মিডিয়ার পরিবেশ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?

তানভীর মেহেদীঃ আমরা সোশাল মিডিয়াকে আদালত বানিয়ে ফেলেছি।

প্রশ্নঃ সোস্যাল মিডিয়ায় সবাই জাজমেন্টাল। হুট করে সোস্যাল মিডিয়ায় সবাই জাজ হয়ে যাওয়ার কারণ কী?

তানভীর মেহেদীঃ ব্যক্তি কিংবা সামাজিক জীবনে আমরা বাংলাদেশিরা অনেক বেশি জাজমেন্টাল। এতদিনে এসে আমাদের ম্যাক্সিমাম মানুষজন সোশাল মিডিয়াতে চলে এসেছে। এজন্য আমাদের অরিজিনাল চেহারাটা বের হয়েছে।

প্রশ্নঃ সোস্যাল মিডিয়ার পজেটিভ এবং নেগেটিভ
ইফেক্ট সম্পর্কে কিছু বলুন।


তানভীর মেহেদীঃ পজেটিভ ব্যাপারটা যোগাযোগ। সেটা কতটা ইজি হচ্ছে সেটা। নেগেটিভ ব্যাপারটাও যোগাযোগ। কতটা বেশি হচ্ছে সেটা।

প্রশ্নঃ সোস্যাল মিডিয়ায় এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। এই প্রতিযোগিতা কেন শুরু হয়েছে এবং শেষ হবে?

তানভীর মেহেদীঃ আমাদের বাস্তব সমাজেও এক ধর‍নের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। সোশাল মিডিয়া তো আলাদা না। আমাদের ন্যাচার থেকে সেটা শুরু হয়েছে। আমাদের মানুষদের আরও বেশি কাজ থাকলে গসিপ এমনিতেই কমে যাবে।

আরো পড়ুনঃ ঋতুস্রাবের সময় যেসব খাবার খাবেন

প্রশ্নঃ আসি সাহিত্য জগৎতে। সাহিত্য জগৎতে নতুন নতুন কবি, সাহিত্যিকদের আগমন হচ্ছে। কিন্তু মানসম্মত কবিতা বা গল্প হচ্ছে কি? নতুনদের বিষয়ে আপনার অভিমত কী?

তানভীর মেহেদীঃ নতুন মানে সময়ের। প্রতিটা সময়েই নতুন কেউ আসবে। সেই সময়ের গল্প লিখে যাবে। সেসব মানসম্মত হচ্ছে কিনা সেটাও নির্ধারণ করবে সময়। আজ যেটা মানসম্মত মনে হচ্ছে না সেটা ত্রিশ বছর পর সবচেয়ে জেনুইন মনে হতেও পারে।

প্রশ্নঃ প্রচারে প্রসার আমরা সবাই জানি। একজন লেখক নিজের বইয়ের প্রচার করবেন স্বাভাবিক। কিন্তু কতটুকু প্রচার আর কতটুকু হকারিং সেটা তাকে জানতে হবে না? নতুন লেখকরা সেটা মেইনটেইন করতে পারছে?

তানভীর মেহেদীঃ অনলাইনে বই আর শাড়ি আমরা একভাবে বিক্রি করছি। আলাদা করা জরুরী, খুব জরুরী। সবাই জানে, জানতে হবে না। মানলেই হবে।

প্রশ্নঃ বর্তমানের পুরো সাহিত্য জগৎ নিয়ে আপনার অভিমত কী?

তানভীর মেহেদীঃ আমরা অতীতের চেয়ে ভালো করিনি। আমরা আগাইনি।

প্রশ্নঃ ওমেন্সকর্নারে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। ওমেন্সদের নিয়ে আপনার কিছু বলা উচিত। আপনার কাছে নারী অধিকারের সংজ্ঞা কী?

তানভীর মেহেদীঃ নারী কাজ করবে, আমিও কাজ করবো। এক লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করবো। পৃথিবীটা মূলত কাজের। নারীর কাজের পরিবেশটা নিরাপদ হলে এসব নিয়ে আমাদের আর কথা বলতে হতো না।

প্রশ্নঃ প্রফেশনাল কারণে আপনি বিভিন্ন দেশে ঘুরাঘুরি করেছেন। বিভিন্ন দেশের নারীবাদ আর বাংলাদেশের নারীবাদের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কোথায়?

তানভীর মেহেদীঃ আমরা কাজ কম করি, বাকি সময় আলোচনা করে নষ্ট করি। ফেমিনিজম ম্যাক্সিমাম দেশেই টপিক না। তারা এমনিতেই ইকুয়াল। সেখানে পরিচয় শুধু কাজের।

প্রশ্নঃ নারীরা তাদের প্রাপ্ত অধিকার আমাদের সমাজ থেকে পাচ্ছে?

তানভীর মেহেদীঃ না।

আরো পড়ুনঃ গর্ভকালীন স্ট্রেচ মার্ক, কারণ ও প্রতিকার

প্রশ্নঃ অতীতের তুলনায় নারীদের সুযোগ সুবিধা বহুগুণে বেড়েছে। কিন্তু তারা কি সেটা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছে?

তানভীর মেহেদীঃ অবশ্যই পারছে। আমাদের আগের জেনারেশন যা ভাবতেও পারেনি আমাদের জেনারেশনের মেয়েরা তা করে দেখাচ্ছে। নেক্সট জেনারেশন আরও বেশি পারবে।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment