এডভেঞ্চারদের প্রিয় আলুটিলার গল্প 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় সারা বছরই মুখরিত থাকে পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা। দৃষ্টিনন্দন ও রহস্যঘেরা দৃশ্যের কারণেই পর্যটকদের নিকট খুবই পছন্দনীয় স্থান আলুটিলা।

খাগড়াছড়ি শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত আলুটিলা পযর্টনকেন্দ্রে। সেখানে রয়েছে একটি রহস্যময় গুহা। স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে অবস্থিত বলে একে আলুটিলা গুহাই বলা হয়ে থাকে। এটি খাগড়াছড়ির একটি নামকরা পর্যটনকেন্দ্র। 

খাগড়াছড়ি বেড়াতে এলে সবাই অন্তত একবার হলেও এখানে ঘুরে যায়। এটি একটি চমৎকার জায়গা । এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়, যেন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সবচাইতে উঁচু পর্বত। সবার কাছে টিলা নামে পরিচিত হলেও মূলত এটি একটি পর্বতশ্রেণি। এখান থেকে খাগড়াছড়ি শহরের প্রায় সবটুকু অংশ দেখা যায়। শুধু তাই নয়, এখানকার পাহাড়ের সবুজ প্রকৃতি আপনার নজর কেড়ে নেবে। আকাশ, পাহাড় আর মেঘের মিতালি এখানে মায়াবী এক আবহ তৈরি করে।

ইতিহাস, পূর্বে এই পাহাড়টির নাম ছিল আরবারী পর্বত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই জেলাটিতে খাদ্যাভাব দেখা দিলে এখানকার মানুষ এই পাহাড় হতে আলু সংগ্রহ করে খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সেই থেকেই লোকমুখে প্রচারিত হতে হতে এই স্থানটির নাম এখন আলুটিলা। 

আলুটিলার রহস্যময় গুহায় যেতে হলে দর্শনার্থীদের পর্যটনকেন্দ্রের নির্ধারিত টিকেট কাটতে হয়। প্রবেশের শুরুতেই বিশাল দুটি বটবৃক্ষ দর্শনার্থীদের স্বাগতম জানানোর জন্য শতবর্ষ ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রের প্রবেশ মুখ থেকে ডান ও বাম দু-দিকে দুটি রাস্তা রয়েছে। বাম দিকের রাস্তাটি দিয়েই মূলত রহস্য গুহায় যাওয়া যায়। আপনি চাইলে ডান দিকের রাস্তাটি ধরে কিছুটা এগিয়ে বাড়তি আনন্দ উপভোগ করে নিতে পারেন। পর্যটনকেন্দ্রের মূল গেটের ডান দিক দিয়ে যে রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তাটি ধরে কিছুটা পথ এগোলেই সামনে পড়বে সরু একটি পাহাড়িপথ। এটি নিচের দিকে নেমে গেছে। এই পথটি ধরে নিচে নামলে প্রথমেই চোখে পড়বে ছোট আকারের একটি ঝর্না।

মূল ফটক হতে বাম দিকে যে রাস্তাটি সেই রাস্তা দিয়ে কিছুটা এগুলোই দেখা মিলবে সেই রহস্যগুহার। গুহার মুখে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে একটি বিশ্রামাগার। বিশ্রামাগারের সামনে থেকে সোজা একটি পথ গুহার মুখে গিয়ে মিলেছে। গুহার ভেতরে পূর্বে অবশ্যই দর্শনার্থীদের মশাল সংগ্রহ করে নিতে হবে অথবা মাথায় হেডলাইট ওয়ালা ক্যাপ সাথে করে নিতে হবে। কেননা গুহার ভিতরে সূর্যের আলো বিন্দুমাত্রও পৌছায় না। গুহার মুখে গিয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে হবে। ধাপে ধাপে ৩৪০টি সিড়ি বেয়ে নিচে নামলে দেখা মিলবে সেই রহস্যময় গুহার। ভেতরে ঢোকার পর যে কারোরই গায়ে কাটা দিতে বাধ্য। তবে ভীত না হয়ে ধীর পায়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

এখানে অন্য কোনো জীবজন্তুর ভয় নেই। মূলত এর নিচ দিয়ে একটি ঝর্না প্রবাহিত হওয়ার কারণে পর্যটকদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। গুহার ভেতরের পথ ধরে কিছুটা এগোলে দু’দিকে দুটো রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে একটি রাস্তা বন্ধ। সোজা যে রাস্তাটা রয়েছে সেই রাস্তা ধরেই এগোতে হবে। আপনি চাইলে বন্ধ রাস্তাটিতেও ঘুরে আসতে পারেন। মাঝপথে গুহাটির উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে কম হওয়ায় পর্যটকদের মাথা নুইয়ে চলতে হয়। গুহাটির মোট দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। গুহার এপাশ থেকে ওপাশে যেতে সময় লাগে মোটামুটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো। অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত এই গুহাটি দেখে যে কারোরই ভালো লাগবে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment