বকফুল চারা তৈরি, মাটি, জমি তৈরি সম্পর্কে বিস্তারিত

  • ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
  • ডিসেম্বর ২৯, ২০২১

বকফুল শিম বা মটর গোত্রীয় গাছ। কিন্তু গাছ দেখতে মোটেই শিম বা মটরের মত নয়। ফুলের গড়নে কিছুটা মিল থাকলেও পাতা ও গাছ এর সাথে মিল নেই। মাঝারি আকারের ঝাড় জাতীয় বৃক্ষ।

ফুলের আকার আকৃতি গাছের ডালে বকের ঠোঁটের মতো বোটায় ঝুলে থাকতে দেখা যায় বলে এ ফুলের নামকরণ করা হয়েছে। এ গাছের অনেকগুলো বাংলা নাম- বক, বকে, বগ, বকফুল, বগফুল, অগস্তা, অগাতি ইত্যাদি। এ দেশের প্রায় সব অঞ্চলে বকফুল জন্মায়। ফুলগুচ্ছ ভাবে প্রতি বোঁটার অগ্রভাগে ধরে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস হওয়ার কারণসমূহ

প্রয়োজনীয় জলবায়ু ও মাটি: এটি নিরক্ষীয় অঞ্চলের গাছ। ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক ২০০০-৪০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এ গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সমুদ্রতল থেকে ১২০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত স্থানে খুব সহজে এটি জন্মায়। পাহাড়ি অঞ্চলে এটিকে ছায়া প্রদানকারী গাছ হিসেবে লাগানো হয়। যেসব অঞ্চল প্রায় নয় মাস শুষ্ক এবং খরাপ্রবণ থাকে সেখানে এই গাছ লাগিয়ে খুব দ্রুত জমিকে সবুজ আচ্ছাদনে ঢেকে ফেলা যায়। এই গাছ শৈত্যতা কমবেশি সহ্য করতে পারলেও তুষারপাত একেবারেই সহ্য করতে পারে না।

বকফুল গাছ বেলে, দোআঁশ, অনুর্বর, লবণাক্ত, ক্ষারীয়, আম্লীগ যে কোন মাটিতে খুব সহজেই জন্মায় কিন্তু মাটির ধরনের ওপর গাছের বৃদ্ধি নির্ভর করে। তবে এটি কে রাস্তার ধারে, ধান জমির আল বরাবর, খোলা জায়গায় লাগানো যেতে পারে।

কিভাবে চারা তৈরি করবেন?

বক ফুলের চাষের জন্য বীজ থেকে সহজে চারা তৈরি করা যায়। শরৎকাল থেকে হেমন্তকালে ফোটা ফুলের বীজ হয় বসন্তে। তখন বীজতলায় বীজ বুনে চারা রোপণ করতে হবে। গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকাল চারা লাগানোর ভালো সময়।

আরো পড়ুনঃ বিয়ের কেনাকাটায় কনের কসমেটিকসের তালিকায় কি কি থাকা অতি আবশ্যক?

গাছ থেকে বীজ সংগ্রহের পর খুব দ্রুত বীজ মাটিতে বুনে দেয়া ভালো। আষাঢ় মাসে লাগানো গাছে ঠিকমতো যত্ন নিলে কার্তিক মাস থেকে ফুল ফুটতে শুরু করে। বীজ ছাড়া বয়স্ক ডাল কেটে লাগালে তা বেঁচে যায়। বীজতলায় তৈরি করা চারা মাসখানেক বয়স হলেই বীজ থেকে গজানো চারা জমিতে লাগানো যায়। পলিব্যাগে ও চারা তৈরি করা যায়।

চাষের উপযুক্ত জমি তৈরি ও চারা রোপন: সারি করে ২ মিটার দূরে দূরে চারা লাগানো যায়। লাগানোর আগে সবদিকে ৩০ সেন্টিমিটার মাপ এর গর্ত করে গর্তের মাটিতে শুধু জৈব সার মিশিয়ে চারা লাগাতে হয়। ছোট চারা গাছ দেখতে ধইঞ্চা গাছের চারার মত। চারা রোপণের সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে গাছে ফুল ধরে। চারা না তুলে বীজ বুনে সেখানে রেখেও গাছ তৈরি করা যায়। বীজ ছাড়া বয়স্ক ডাল কেটে লাগালে তা বেঁচে যায়। কম উর্বর মাটিতে গাছ হয় সেজন্য রাসায়নিক সার না দিলেও চলে।

সেচ ও পানি নিষ্কাশন: বর্ষাকালে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। সেচ দিলে গাছ বাড়ে।

আগাছা ও নিড়ানি: গাছ যদি প্রায় ২০ বছর বাঁচে তবে ভাল ফলনের জন্য কতদিন রাখা ঠিক নয়। প্রতি ৩ বছর পরপর নতুন গাছ লাগালে ভালো হয়। বর্ষাকালে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। বকফুল গাছ এর ভালো ওমজবুদ গড়নের জন্য ছাঁটাই করা দরকার এতে গাছ বেশি ঝোপালো ও খাটো থাকে।

আরো পড়ুনঃ কাঁকরোল ভর্তা

ফল সংগ্রহ: চারা রোপণের সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে গাছে ফুল ধরে। বকফুল সবজি হিসেবে অতি উত্তম, মুখরোচক, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ফুল।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment