পাখির বাসার নকশা কি কেউ কখনো বুঝতে সক্ষম হয়েছে? 

  • ইয়াসিন প্রধান সাজিদ 
  • মে ৮, ২০১৮

প্রাণী। বাহারি রকমের সৌন্দর্যে ভরপুর, অসাধারণ অনেক রকমের প্রাণী রয়েছে, যারা পুরো পৃথিবীকে মুগ্ধ করে রেখেছে শুধুমাত্র তাদের সৌন্দর্যের ক্ষমতাবলে। এরকম দেখতে গেলে পৃথীবিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। তার মধ্যে যেই প্রজাতি আদিকাল থেকেই তার স্থান ধরে রেখে এসেছে প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়ে, সে প্রজাতি হলো পাখি। 

খুব সহজেই তার সৌন্দর্য মানুষকে খুশি করে দিতে পারে ও  সুন্দর মন এবং সময় উপহার দিতে পারে। সাধারণত সকল প্রাণীর-ই অন্ন এবং বাসস্থান অতি প্রয়োজন, বস্ত্র সাধারণত মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীর দরকার হয়না। প্রাণীর অন্ন সকল প্রাণী-ই খোজে নেয়। বাঁচার ইচ্ছা সকল প্রাণীর ই থাকে। আর তাই তারা মৃত্যর আগ পর্যন্ত অন্নের সন্ধান করতে থাকে। কোনো না কোনো ভাবে অন্নের জোগান হয়ে গেলেও প্রত্যেক  প্রাণীর-ই সহজেই বাসস্থান টা জোগান হয়না। প্রত্যেক প্রাণীর নির্দিষ্ট সমাজ থাকে আর বাসস্থানও।

সকল প্রাণী সব সমাজে থাকতে পারেনা তবে পাখি সব ধরনের সমাজেই মানায়। পাখিও নিজের খাবার নিজেই জোগান দেয়,আবার বাসস্থানও নিজের ঐ ঠোঁটের সাহায্যে তৈরী করে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তবুও অনেক মানুষই এখনও রাস্তাঘাটে তাদের বাসস্থান খোঁজে নেয়। অনেকেই আবার ভয়ে থাকে তাদের বাসস্থান কখন যেন ঝড়ে ভেঙ্গে যায়।

আবার উচ্চপদের মানুষ থাকে বিশাল ইট পাথরের ঘরে। তবে এই ঘরও একসময় কোনো দুর্যোগে ঠিকই ভেঙ্গে পড়ে। তবে আমার আলোচনার সেই পাখির ঠোঁটের তৈরী ঘরটি সব দুর্যোগের প্রতিরোধ করতে পারে। বিশেষ করে বাবুই আর চড়ুই পাখি তৈরী করে অনেক মজবুত ঘর। তাদের ঘর তৈরীর কাজ শুরু হয় বৈশাখ মাসের দিকে। একটি একটি লতা পাতা কুড়িয়ে নিয়ে তারা নারিকেল অথবা একটু লম্বা পাতার গাছে তৈরী করে তাদের বাসস্থান।

আবার এই বাসা দেখা যায় ঘরের কোণেতে। তাদের বাসারও অনেক ডিজাইন আছে। কিছু আছে লম্বা তবে মাঝখানে একটু গোলাকৃতির চওড়া জায়গা থাকে। আর সেখানে তারা ঘুমায়। আরো কিছু আছে বিচিত্র সবুজ রঙ আর সুন্দর ডিজাইনের। পাখির বাসার দরজা সাধারণত নিচুদিক দিয়ে হয়, যেন পানি বা অন্যকিছু ঢুকতে না পারে। আসলেই পাখির বাসা এভাবেই তৈরী হয় যে, পানি তাদের বিছানায় যেতে পারেনা। পাখির বাসা না ইট পাথরের, না প্লাস্টিক বা ইস্পাতের। 

এটা শুধুই খড়কুটা দিয়ে বানানো আর সাইজটা মানুষের হাতেরই সমান। তবুও মানুষ চাইলেই কখনোই পাখির বাসাকে নষ্ট করতে পারবেননা। মানুষের তৈরী মজবুত ঘরগুলোও তো চাইলেই ভাঙ্গা সম্ভব। তবে পাখির বাসা শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করেও নষ্ট করা সম্ভব না। এই বাসাকে নষ্ট করার একটাই পদ্ধতি হলো ধার কোনো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করা।

মানুষের তৈরী সকল ঘরের ই নকশা থাকে যা যেকোনো মানুষ ই বুঝতে সম্ভব। পাখির বাসার নকশা কি কেও কখনো বুঝতে সক্ষম হয়েছেন? আসলে কেও কখনো এটা দেখতেই চাননি। মানুষের পক্ষে কখনোই পাখির বাসার নকশা বুঝা সম্ভবনা। পৃথিবীতে আজ আলোচনার বিষয়ের অভাব নেই, বিষ্ময় করার মতো জিনিস অভাব নেই।

আমাকে অবাক করেছে পাখির ঠোঁটের কারুকাজ। কতইনা বিষ্ময়কর এই অপরুপ কারুকাজ। বাতাসে দোলতে থাকে গাছের চুড়ায় সেই খড়কুটার বাসাটি। অতি ভালোবাসা দিয়ে আর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে তেরী হয় পাখির বাসা। যা পৃথিবীতে সকল বিখ্যাত উচু বিল্ডিং আর দালানকোঠার থেকেও বিখ্যাত। বাবুই বা চড়ুই হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী। গাছের চূড়ায় ঝুলানো, বাতাসে দুলে অসাধারণ কারুকাজে খড়কুটার তৈরী এই বাসাটি প্রকৃতিকে দেয় এক অনন্য সৌন্দর্য।

ছবি : ইয়াসিন প্রধান সাজিদ 

Leave a Comment